শেষের পাতা
বরগুনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ
মামলা তুলে না নেয়ায় বাবাকে হত্যা
বরগুনা প্রতিনিধি
১৩ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবারবরগুনা সদর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত ৫ই মার্চ ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় এই মামলাটি করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি সীজিব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে
কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকেই বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলেন অভিযুক্তের বাবা শ্রীরাম চন্দ্র রায়। কিন্তু বাদী মামলা তুলে নেননি। এজন্য তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়ির পেছনের ঝোপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মন্টু চন্দ্র দাস (৩৫) একই এলাকার জয়েশ্বর চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি বরগুনা মুরগি বাজারের এক দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, রাত গভীর হলেও মন্টু বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে বের হন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঝোপের ভেতরে মোবাইলের রিংটোন শুনে তারা মন্টুর মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী বলেন, গত রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় স্বামীর মোবাইলে কল দেই। সে সময় বাড়ির পেছন থেকে তার মোবাইলের রিংটোনের শব্দ ভেসে আসছিল। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি, তার মরদেহ পড়ে আছে। আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ঠা মার্চ আমার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে সীজিব চন্দ্র রায়। পরদিন এ ঘটনায় ওর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই সীজিবকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকেই মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিল সিজীবের বাবা শ্রীরাম চন্দ্র রায়। মামলা তুলে না নেয়ায় তাকে হত্যা করেছে শ্রীরাম। বাদীপক্ষের আইনজীবী বাবুল দাস বলেন, আদালতে বুধবার (১২ মার্চ) ধর্ষণ মামলার তারিখ ধার্য ছিল। এর আগে, বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলেন শ্রীরাম চন্দ্র রায়। মামলার তারিখের দিনই তার মরদেহ পাওয়া গেল।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণ মামলার বাদীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।