শাহীন সামাদ
শাহীন সামাদ | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | গায়িকা |
আদি নিবাস | নোয়াখালী জেলা, বাংলাদেশ |
দাম্পত্য সঙ্গী | হাবিব উস সামাদ |
পিতা-মাতা |
|
পুরস্কার | একুশে পদক |
ওয়েবসাইট | shaheensamad |
শাহীন সামাদ (জন্ম ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৫২) হলেন একজন স্বনামধন্য বাংলাদেশী নজরুলগীতি শিল্পী।[১][২] সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করেন।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]শাহীন সামাদ ১৯৫২ সালের ২৭ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তার পিতা সামসুল হুদা এবং মাতা শামসুন নাহার রহিমা খাতুন। তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কাটে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়।[১] তিনি ঢাকায় রাম গোপাল, ওস্তাদ ফজলুল হক মিয়া, সনজীদা খাতুন এবং ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছ থেকে সঙ্গীতের তালিম গ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে ১৩ বছর বয়সে তিনি ছায়ানটে ভর্তি হন। সেই বছর তার বাবা মারা যান।[৪] সেখানে লুতফর রহমান, সোহরাব হোসেন ও অঞ্জলি রায় তার শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি লন্ডন চলে যান।[৫] লন্ডন থেকে ফিরে এসে তিনি সুধীন দাশ এর কাছ থেকে গানের তালিম নেন।[১]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]শাহীন সামাদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন শিল্পী ছিলেন।[৬] তিনি ৩৬টি দেশাত্মবোধক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল "তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর", "মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি", "রক্তের প্রতিশোধ রক্তেই নেব আমরা"।[৭] এছাড়া এ সময়ে তিনি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী "বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা"য় যোগ দেন। তারা বিভিন্ন রিফিউজি ক্যাম্পে এবং মুক্ত অঞ্চল এলাকায় ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধাদের ও সাধারণ মানুষকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করতেন, পুতুল খেলা ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করতেন।[৮]
২০১৬ সালে তার চারটি গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। আল্লাহকে যে পাইতে চায় ও দূর আজানের মধূর ধ্বনি অ্যালবাম দুটি হামদ-নাত বিষয়ক; নানা বর্ণের গান অ্যালবামে রয়েছে পঞ্চকবির গান; এবং অন্তরে তুমি অ্যালবাম নজরুলগীতি দিয়ে সাজানো হয়েছে।[৯]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]শাহীন সামাদ হাবিব উস সামাদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[১০]
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
[সম্পাদনা]১৯৯৫ সালে তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত মুক্তির গান প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে শাহীন সামাদ অংশগ্রহণ করেন।[১১]
ডিস্কোগ্রাফি
[সম্পাদনা]- নহে নহে প্রিয়, নজরুলগীতি
- নিশি রাত
- সন্ধ্যাতারা (২০০৯, নজরুলগীতি)
- অভিসার, নজরুলগীতি
- মোহাব্বাত মে এয় ক্যায়া
- আল্লাহকে যে পাইতে চায় (২০১৬, হামদ-নাত)
- দূর আজানের মধূর ধ্বনি (২০১৬, হামদ-নাত)
- নানা বর্ণের গান (২০১৬, পঞ্চকবির গান)
- অন্তরে তুমি (২০১৬, নজরুলগীতি)
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]- শিল্পকলায় একুশে পদক (২০১৬)
- সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস
- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পুরস্কার (২০০৯)
- ৯ম উত্তর আমেরিকা নজরুল সম্মেলন পুরস্কার (২০০৪)
- বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী পুরস্কার (২০০২)
- সেতুবন্ধন পুরস্কার (২০০১)
- আমরা সূর্যমুখী পুরস্কার (২০০০)
- জাতীয় প্রেস ক্লাব পুরস্কার (২০০০)
- পৌষ মেলা পুরস্কার (২০০০)
- বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনার পুরস্কার (১৯৯৯)
- বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন পুরস্কার (১৯৯৮)
- শ্যামলীর রোটারি ক্লাব পুরস্কার (১৯৯৭)
- দিলিপ কুমার রায় শতবর্ষ পুরস্কার (১৯৯৭)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Shaheen Samad Biography"। Shaheen Samad। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "Shaheen Samad: "Etched in my mind...""। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "শুভ জন্মদিন শাহীন সামাদ"। জাগো নিউজ। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ আওয়াল, মাসুম (ডিসেম্বর ১৬, ২০১৪)। "মাকে কষ্ট দিয়ে যুদ্ধে গিয়েছি : শাহীন সামাদ"। দ্য রিপোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "An exclusive dialogue with Shaheen Samad"। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ আহসান, সৈয়দ বদরুল (১ ডিসেম্বর ২০১২)। "1971 and the songs we sang"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ বিউটি, রওশন আরা (১৬ জানুয়ারি ২০১৪)। "1971 and the songs we sang"। দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Tareque Masud and Muktir Gaan"। প্রিয় ডটকম। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ Kamal, Nashid (মে ১৪, ২০১৬)। "চার অ্যালবাম নিয়ে শাহীন সামাদ"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ Kamal, Nashid (২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Shaheen Samad - A valiant singer"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "Muktir Gaan"। tarequemasud.org। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৭।