বিষয়বস্তুতে চলুন

জাতিস্মর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জাতিস্মরদের পূর্বজন্ম মনে রাখার অলৌকিক ক্ষমতা থাকে। প্রায় ২০ শতাংশ [] মার্কিনী পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে। জাতিস্মরদের অস্তিত্ব মেনে নেওয়া মানে পূর্বজন্ম এবং পুনর্জন্মে বিশ্বাস করা। যাঁরা জাতিস্মরদের সন্দেহের চোখে দেখেন তারা বলেন যে এই পূর্বজন্ম মনে রাখা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার অনেক বৈজ্ঞানিক বলেন[] যে পুনর্জন্মকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করা সম্ভব। পৃথিবীর বহু স্থানে ছোট শিশুরা নিজেদের জাতিস্মর হিসাবে ঘোষণা করে। এদের বয়স সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছর হয়। অনেক সময় এরা, এদের ব্যবহারে, একরকম ভীতি প্রদর্শন করে। দেখা যায় যে ওই শিশুদের পূর্বজন্ম সংক্রান্ত বক্তব্যে ভীতির কারণ পাওয়া যায় []। বহু ক্ষেত্রে জাতিস্মরের পূর্বজন্মের পরিবারের সঙ্গে বর্তমান জন্মের পরিবারের কোন সম্পর্ক অথবা পরিচয় থাকে না। সাধারণত সাত বছর বয়স অবধি জাতিস্মরেরা পূর্ব জীবন মনে রাখতে পারে। ক্যারল ব্যোমানের [] বইয়ে [] জাতিস্মরদের বিবরণ আছে। ক্যারল মনে করেন জাতিস্মরদের পূর্বজন্মের বিবরণ কল্পনা প্রসূত নয়। ওনার মতে কল্পনা মনের ব্যাপার। জাতিস্মরদের কাছে পূর্বজীবন হল সত্যি ঘটনার পূণাঙ্গ মানসিক চিত্র। একমাত্র একজন সূক্ষ অনুভূতিসম্পন্ন মানুষের পক্ষেই এর তফাৎ করা সম্ভব।

জাতিস্মর বোঝার উপায়

[সম্পাদনা]

ক্যারল ব্যোমানের মতে জাতিস্মর বোঝার চার রকম [] উপায় আছেঃ

(ক) স্বাভাবিক স্বচ্ছন্দ ভঙ্গিতে পূর্বজন্ম বিষয়ে তথ্য দেওয়া।

(খ) কয়েক দিন/সপ্তাহ/মাস/বছর ধরে পূর্বজন্ম বিষয়ক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

(গ) অভিজ্ঞতার বাইরে জ্ঞান।

(ঘ) সেইমত ব্যবহারিক এবং শারীরিক বৈশিষ্টের প্রকাশ।

গবেষণা

[সম্পাদনা]

জাতিস্মরদের নিয়ে গবেষণায় অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাম ইয়ান স্টেভেনসন []। তিনি জাতিস্মরদের নিয়ে গবেষণা পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করেন। তার প্রকাশনার [] সংখ্যা অনেক এবং অনেকেই তার লেখার মধ্যেও বৈজ্ঞানিক সত্য খুঁজে পান। কিন্তু সবাই এঁদের লেখার সমর্থক নন। জাতিস্মর গবেষকদের কাজের নিষ্ঠা মেনে নিলেও নানারকম প্রশ্ন [] থেকে যায়। যেমনঃ

(ক) জাতিস্মর সেই সব সমাজেই আবিষ্কার হয়, যেখানে পূর্বজন্ম এবং পুনর্জন্মের মতবাদের উপর প্রবল বিশ্বাস। যেমন যেখানে জাতিস্মরদের লিঙ্গ পরিবর্তনের উপর বিশ্বাস নেই, সেখানে জাতিস্মরদের বর্তমান এবং পূর্বজন্মের মধ্যে লিঙ্গ পরিবর্তনের নজির পাওয়া যায় না। আবার যে সমাজ বিশ্বাস করে যে মৃত্যর পরে তৎক্ষণাৎ পুনর্জন্ম সম্ভব , সেই সমাজে সেইরকমই দেখা যায়।

(খ) অধিকাংশ ক্ষেত্রে জাতিস্মরের পূর্বজীবন সেই সমাজ অথবা পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যদি পিতৃশাসিত সমাজ হয়, তাহলে জাতিস্মরের পূর্বজীবন পিতার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যদি মাতৃশাসিত সমাজ হয় তাহলে এর উল্টো হয়।

(গ) জাতিস্মরের পূর্বজন্মের ঘটনার বিশ্লেষণগুলি প্রধানত সামাজিক বিশ্বাস এবং রীতির উপর নির্ভরশীল। কিছু বিশ্লেষণ চক্রাকার। অর্থাৎ শুরু এবং শেষ নেই। [১০]

(ঘ) জাতিস্মরদের বর্ণিত ঘটনাগুলির অন্যরকম বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যাও সম্ভব।

লক্ষণশাস্ত্র

[সম্পাদনা]

লক্ষণশাস্ত্র মতে, জন্মদাগ থেকেই জানা যেতে পারে সেই ব্যক্তির পূর্বজন্ম সম্পর্কে।

• লাল, প্রায় রক্তবর্ণ জন্মদাগ থেকে নাকি বোঝা যায়, এই দাগের অধিকারীর পূর্বজন্ম খুব দূরবর্তী নয়। এই দাগ পূর্বজন্মে পুড়ে যাওয়ার দাগও হতে পারে। যদি লাল দাগ হালকা হয়, তা হলে বুঝতে হবে, পূর্বজন্মে দহনক্ষতের নিরাময় হয়েছিল।

• বেশ গাঢ় বুলেটক্ষতের মতো দাগ নাকি জানায়, বিগত জন্মে ব্যক্তি অস্ত্রাঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

• বুলেটক্ষতের মতো দাগ যদি হালকা রঙের হয়ে থাকে, বুঝতে হবে সেই ব্যক্তির বিগত জীবনে অস্ত্রক্ষত খুবই গভীর ছিল। হয়তো অস্ত্র শরীরের ভিতরে প্রবেশ করেছিল।[১১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "The Harris Poll® #90, December 14, 2005. The Religious and Other Beliefs of Americans 2005"। অক্টোবর ২৯, ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৩, ২০০৬ 
  2. Reincarnation is Now a Scientifically Acceptable Phenomenon by Dr. Granville Dharmawardena, University of Colombo (Based on a Scientific paper presented at the 52nd Annual Sessions of the Sri Lanka Association for the Advancement of Science, November 1996)
  3. "Children Who Claim to Remember Previous Lives। University of Virginia Healthsystem"। ২১ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০০৬ 
  4. "About Carol Bowman"। ২৮ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০০৬ 
  5. Children's Past Lives: How Past Life Memories Affect Your Child
  6. Chapter 10: The Four Signs[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০০৬ 
  8. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০০৬ 
  9. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০০৬ 
  10. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০০৬ 
  11. http://ebela.in/lifestyle/mystery-of-birth-marks-dgtl-1.441582