বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একাদশ অধ্যায়।
৩৩৯

 উচ্চতর নীতিজ্ঞান সহ এই অদ্ভুত শক্তি বিকাশ করতে সমর্থ হওয়ায় ঋষিরা অবিমিশ্র সুখময় স্থান যে স্বর্গ তাহও ত্যাগ করিয়াছেন এবং মানবজাতির গুরু অর্থাৎ আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা হইয়াছেন। তাঁহারাই আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতিসাধনের উপযোগী করিয়া ভারতবর্ষের সমাজ ও ধর্মের বাহ্যাবয়ব সংগঠিত করিয়াছেন। বিশ্বের সমস্তই যে এক ও অদ্বিতীয়, ইহাই হিন্দুদের বিশ্বাস। তাহারা মানুষ ও খনিজ ধাতুতে প্রকৃত পক্ষে কোনও প্রভেদ দেখিতে পায় না, কারণ বিশ্বের তাবৎ বস্তুই সেই অদ্বিতীয় পুরুষের বিকাশমাত্র। এইরূপ জ্ঞানবশতঃ হিন্দুরা সামান্য কীট পতঙ্গ ও বৃক্ষের প্রতি সমভাবে দয়া ও সহানুভূতি প্রকাশ করিয়া থাকে। সুতরাং হিন্দুদের লক্ষ্য অতি উচ্চ হইলেও তাহারা অতি নীচের প্রতি লক্ষ্য রাখারও অত্যাবশ্যকতা উপলব্ধি করিয়াছে, এবং তদনুসারে যে ধর্ম্মের আবিস্কার করিয়াছে, তাহা 'সনাতন ধর্ম্ম’ অর্থাৎ সর্বকালের উপযোগী ধর্ম্ম নামে অভিহিত হইয়াছে; এই ধর্ম্ম সর্ব্বাবস্থাতেই মানুষের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত করিতে সমর্থ: হিন্দুরা ইহাও বিশ্বাস করে যে, মানুষ আত্মজ্ঞান লাভ করিয়া ভগবান্‌কে প্রাপ্ত ও সম্পূর্ণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে যে অসংখ্য জীবন অতিক্রম করিতে হইবে, বর্ত্তমান জীবন সেই সুদীর্ঘ জীবনশৃঙ্খলের একটী কড়া মাত্র। এই হেতু তাহারা সাংসারিক তাবৎ বিষয়কে অকিঞ্চিৎকর জ্ঞান করে, এবং চিত্তের প্রশান্ততা রক্ষা করিয়া,— অর্থাৎ সৌভাগ্যগর্ব্বে স্ফীত বা দুর্ভাগ্যদুঃখে ভগ্নোদ্যম না হইয়া-ক্রমাগত আপনাদের আধ্যাত্মিক উন্নতিসাধনে যত্নশীল থাকে। হিন্দুদের পাপপূণ্যের ধারণা কিছু বিশেষ রকমের। মানুষের ধর্ম্মের সহিত সংস্রব না থাকিলে কোন কার্য্যই তাহাদের নিকট