বিষয়বস্তুতে চলুন

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্যামুয়েল হ্যানিম্যান
স্যামুয়েল হ্যানিম্যান
জন্ম১০ এপ্রিল, ১৭৫৫
মৃত্যু২ জুলাই, ১৮৪৩
জাতীয়তাজার্মান
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রহোমিওপ্যাথি

ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডরিখ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (জার্মান: [ˈhaːnəman]; ১০ এপ্রিল ১৭৫৫ - ২ জুলাই ১৮৪৩) জার্মানির একজন বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন, তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আবিষ্কারক।

হ্যানিম্যান ১৮০৫ সালে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চালু করেন। ১৮১০ সালে চিকিৎসা নিয়মাবলী সংক্রান্ত গ্রন্থ অর্গানন অব রেসনাল হেলিং আর্ট (Organon der rationellen Heilkunde) জার্মানি ভাষায় প্রকাশ করেন[] যা পরবর্তীকালে অর্গানন অব মেডিসিন নামে প্রকাশিত হয়। তিনি ১৮১২ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর হতে ১৮২১ সাল পর্যন্ত লিপজিগ বিশ্বিবিদ্যালয়ে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে শিক্ষা দান করেন।। কথ্বেনে এসে সাফল্য পান। তিনি ১৮৩৫ সালের জুন মাসে জার্মানি ছেড়ে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন এবং ১৮৪৩ সালে প্যারিসেই মৃত্যুবরণ করেন।

বাল্যকাল

[সম্পাদনা]

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (জার্মান উচ্চারণ) জার্মানির সাক্সনী রাজ্যের ড্রেসড্রেন শহরের নিকটে মিশেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ক্রিশ্চিয়ান গটফ্রিড হ্যানিম্যান Christian Gottfried Hahnemann চীনামাটির পাত্রের জন্য বিখ্যাত শহর মিশেন [] এ একজন চীনামাটির পাত্রের ডিজাইনার ও পেইন্টার ছিলেন। তিনি পিতা মাতার ৫ জন সন্তানের মধ্য ৩য় ছিলেন [] এবং শিশু বয়সেই বিজ্ঞান ও ভাষা শিক্ষায় দক্ষতা প্রদর্শন করেন। []

মাতা- জোহানা ক্রিশ্চিয়ানা (Johonna Christiana) ছিলেন তার পিতার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার গর্ভে স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ছাড়াও অগাস্ট হ্যানিম্যান (August Hahnemann), চার্লোটি হ্যানিম্যান (Charlotee Hahnemann) ও মিনা হ্যানিম্যান (Minna Hahnemann) নামে এক ভাই ও দু’ বোনের জন্ম হয়। []

পিতামহ- ক্রিস্টফ হ্যানিম্যান (Christoph Hahnemann) তিনি জার্মানির লচেস্টেডে [[]] রং-তুলির কাজ করতেন।

যুবক বয়সেই হ্যানিম্যান বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি ইংরেজি, ফরাসি, ইতালীয়, গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষার ব্যুৎপত্তি লাভ করেন. এবং শেষ পর্যন্ত অনুবাদক ও ভাষার শিক্ষক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তিনি এ ছাড়াও "আরবি, সিরিয়াক, চ্যাডউইক এবং হিব্রূ" ভাষাতে দক্ষতা অর্জন করেন.[]

শিক্ষা জীবন

[সম্পাদনা]

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এর বাল্যশিক্ষা ও লেখাপড়ায় হাতে খড়ি হয় বাবা-মায়ের কাছ থেকে। ১৭৬৭ সালের ২০ জুলাই ১২ বছর ২ মাস ১০ দিন বয়সে তাকে মিসেনের টাউন স্কুলে ভর্তি করা হয়। অতঃপর তিনি ১৭৭৪ সালের ২০ নভেম্বর ১৯ বছর বয়সে ফার্স্টেন অ্যাডল্যান্ডে স্কুল সেন্ট আফ্রা স্কুল তে ভর্তি হন। এখানে তিনি হিপোক্র্যাটিসের লেখার সাথে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি ল্যাটিন, গ্রীক ও হিব্রু ভাষা এবং ইতিহাস, পদার্থবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা শিক্ষা করেন। চিকিৎসা বিদ্যা ছিল তার প্রিয় বিষয়। ১৭৭৫ সনে বিশ বছর বয়সে তিনি লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু তিনি এ প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা ও কম সুযোগ সুবিধার জন্য অস্বস্তি বোধ করেন। মেডিসিন শিক্ষার্থীদের জন্য লিপজিগ না ছিল ক্লিনিক, না ছিল হাসপাতাল। [] হ্যানিম্যান লিপজিগ এ ঔষধ নিয়ে দুই বছর পড়াশোনা করেন। [6] তার আয় কম থাকার কারণে তিনি অর্থের বিনিময়ে ইংরেজি হতে বই অনুবাদ এবং ধনী গ্রীকদেরকে ফ্রেঞ্চ ভাষা শিখানোর কাজ শুরু করেন। [] এভাবেই হ্যানিম্যান এর নিয়মিত ছাত্রজীবনের ইতি ঘটে।

পরবর্তীতে ১৭৭৭ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার লিওপোল্ডস্টট জেলার ব্রাদার্স অব মার্সি হাসপাতালে [[১০]] চিকিৎসা বিদ্যা শিখতে আসেন। এখানে তিনি হিপোক্রিটাস [[১১]], গ্যালেন ও স্টোয়ার্কের লেখাগুলিা সম্পর্কে ভালভাবে জানতে পারেন। এছাড়াও প্রখ্যাত চিকিৎসক জে ভন কোয়ারিনের প্রত্যক্ষ সহানুভূতি লাভ করে তার কাছে হাতে কলমে রোগী দেখার শিক্ষা পান। এ হাসপাতালে নয় মাস থাকার পর ছাত্রাবাস হতে হ্যানিম্যানের অর্থ চুরি যাবার ফলে ও দারিদ্রতার কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন প্রফেসর জে ভন কোয়ারিনের সহযোগিতায় তিনি ট্রানসেলভ্যানিয়ার গভর্নর ব্যারণ এস ভন ব্রউঁকেনথল এর সাথে হার্মানস্ট্যাটে চলে যান। এখানে তিনি গভর্নরের মুদ্রা ও চিত্রকর্মের সংগ্রহশালার তত্ত্বাবধায়ক, লাইব্রেরিয়ান ও পারিবারিক চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। একই সাথে হাতে কলমে বাইরের রোগী দেখার ও ব্যাপক পড়াশুনার সুযোগ পান। এরপর আবার ১ বছর ৯ মাস পরে ১৭৭৯ সালে এরল্যাঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। এরপর আবার ১ বছর ৯ মাস পরে ১৭৭৯ সালে এরল্যাঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। এখানে তিনি হেফ্রাথ স্কেবারের কাছে এসে উদ্ভিদবিদ্যায় পারদর্শী হন এবং ১৭৭৯ সালের ১০ ই আগস্ট চিকিৎসাবিদ্যায় ডক্টরেট অব মেডিসিন বা এম.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। এ ডিগ্রী লাভের জন্য হ্যানিম্যান “ আপেক্ষিক রোগের কারণ ও এর চিকিৎসা” (Conspectus adfectuum spasmodicorum aetiologicus et therapeuticus)[[১২]] [[১৩]] বিষয়ে ২০ পৃষ্ঠা ব্যাপী একখানা ছাপানো গবেষণাপত্র পেশ করেছিলেন।[১৪]

ভাষাবিদ, অনুবাদক ও লেখক

[সম্পাদনা]

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ২২ বছর বয়সে ১১টি ভাষায় সুপন্ডিত হন, যেমন- জার্মান, গ্রীক, ল্যাটিন, ইংরেজি, ইতালীয়, হিব্রু, সিরিয়ান, আরবি, স্প্যানিশ, ফরাসি ও চ্যাডউইক। মিসেনের টাউন স্কুলে পড়ার সময় তিনি তার নিচের শ্রেনীর শিক্ষার্থীদেরকে গ্রীক ভাষা শেখাতেন। সেন্ট আফ্রা বিদ্যালয় হতে বিদায়ের সময় “মানুষের হাতের অদ্ভূদ গড়ন” শিরোনামে ল্যাটিন ভাষায় প্রবন্ধ লেখেন। লিপজিকে পড়ার সময় রাতে ধনী গ্রীক সন্তানদেরকে জার্মান ও ফ্রেঞ্চ ভাষা শেখাতেন।

তিনি একজন নামকরা অনুবাদক ছিলেন। বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, কৃষিবিদ্যা, দর্শন, সাধারণ সাহিত্যকর্ম বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ভাষা হতে জার্মান ভাষায় অসংখ্য বই পত্র অনুবাদ করেন। যেমন (১) ইংরেজি ভাষা হতে ১৫ টি বইয়ের মোট ২১ খন্ড (১৭৭৭-১৮০০), (২) ফ্রেঞ্চ বা ফরাসি ভাষা হতে ৬ টি বইয়ের মোট ৯টি খন্ড (১৭৮৪-১৭৯৬), (৩) ইতালীয় ভাষা হতে ১ টি (১৭৯০) ও (৪) ল্যাটিন হতে ১ টি বই (১৮০৬)। তার এ অসাধারণ ভাষাজ্ঞান ও অনুবাদ-কর্ম পরবর্তী কালে নিজের অসংখ্য লেখার উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। নিজেও তা থেকে ব্যাপক জ্ঞান লাভ করেন। এমনকি ১৭৯০ সালে উইলিয়াম কুলেন (১৭১০-১৭৯০) এর ইংরেজি লেখা “ এ টিয়েটাইজ অব মেটেরিয়া মেডিকা” এর দ্বিতীয় খন্ড অনুবাদ কালে তিনি হোমিওপ্যাথির আরোগ্য নীতি “লাইক কিউর লাইক” আবিষ্কার করেন। তিনি ১৮০৪ সালে দেশাউতে অবস্থানকালে প্রচলিত অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা প্রদান হতে বিরত থাকেন এবং কেবল মাত্র লেখার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। “ এই সকল অজানা চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা আমার রোগভোগকারী ভাইদেরকে চিকিৎসা করতে আমার বিবেক আমাকে সহজেই অনুমোদন দেয় না। চিন্তাধারা এমনদিকে যাচ্ছিল যেন আমি একজন অনিষ্টকারী খুনি অথবা মানুষের অমঙ্গলসাধক, সুতরাং আমি আমার বিয়ের প্রথম বছরেই এই ভয়ানক চিকিৎসা পদ্ধতি ছেড়েই দেই এবং নিজেকে রসায়ন শাস্ত্র ও অনুবাদকের কাজে নিয়োজিত করি” [[১৫]]। এছাড়া ১৭৭৯ সাল থেকে ১৮৪৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য মৌলিক রচনাদি, বই পত্র, পত্রিকায় প্রবন্ধ রচনা করেন। [১৬]

হ্যানিম্যানের রচনাবলী[১৭]

[সম্পাদনা]

বই

১) ফ্রাগমেন্ট দ্য ভিরিবাস  মেডিকামেন্টোরাম পজিটিভিজ সিভ ইন স্যানোকর্পোরি হিউম্যানো অবজার্ভেটিস[১৮] -১৮০৫. ২)অর্গানন অব আর্ট অব হেলিং -১৮১০. ৩) মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা-১৮১১. ৪) রেপার্টরিয়াম -১৮১৭. ৫) ক্রণিক ডিজিজেস, দেয়ার পিকিউলিয়ার নেচার এন্ড হোমিওপ্যাথিক কিউর -১৮২৮. ৬) স্ক্রফিউলা ক্ষত ও এর চিকিৎসা ৭) যৌন রোগে সার্জনদের প্রতি নির্দেশনা -১৭৮৯.

প্রবন্ধ 

১) ডা. ক্রেব এর চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা -১৭৮১. ২) পুরাতন ক্ষত ও আলসার রোগের নির্দেশনা -১৭৮৪.  ৩) চিকিৎসা বিদ্যার পুনর্জন্মের প্রয়োজন  ৪) আর্সেনিকের বিষক্রিয়া, এর চিকিৎসা ও বিচার বিভাগীয় সত্য উদ্‌ঘাটন -১৭৮৬. ৫) পিত্ত ও পিত্তপাথুরী ৬) পচন নিরোধক একটা অসাধারণ শক্তিশালী ঔষধ -১৭৮৮. ৭) স্বাস্থের বন্ধু-১৭৮৯.

এছাড়াও যা উল্লেখ যোগ্য

১) ঔষধ প্রুভিং রিপোর্টের ওপর লেখা ১০ খন্ড বই। ২) রসায়ন ও চিকিৎসা বিদ্যার ওপর লেখা ৭০টি মৌলিক রচনা। ৩) ২৪ জন লেখকের ইংরেজি, ল্যাটিন, ফরাসি ও ইতালীয় ভাষার লেখা থেকে জার্মান ভাষায় অনূদিত ২৩ খানা বইয়ের সর্বমোট ৩২ খন্ড রচনা সম্ভার। ৪) রোগীর কেস রেকর্ড বই-৫৪ টি।

শিক্ষক

[সম্পাদনা]

ছাত্র জীবনের হ্যানিম্যান বিভিন্ন ভাষা শেখানের শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করার পর, হোমিওপ্যাথি শিক্ষার প্রচার ও প্রসারের জন্য হোমিওপ্যাথি হাসপাতালের সংলগ্ন কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তবে তা সফল হয় নি। ১৮১১ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ৬ মাস ব্যাপী শিক্ষা কোর্সের জন্য এক বিজ্ঞপ্তি দেন কিন্তু তা ছাত্রদের উৎসাহের অভাবে কার্যকর হয় নি। অতঃপর ১৮১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হতে ১৮২১ সাল পর্যন্ত লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ছয় মাস ধরে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে বক্তৃতা দিতেন। প্রত্যেক শনি ও বুধবার বিকাল ২টা হতে ৩টা পর্যন্ত এ ক্লাশ চলত। তার এ ক্লাশে ছাত্র, চিকিৎসক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, যুবক, বৃদ্ধ প্রভৃতি ধরনের লোকের সমাবেশ ঘটে। [১৯]

রসায়নবিদ ও ঔষধ প্রস্তুতকারক

[সম্পাদনা]

রসায়নবিদ হিসেবে হ্যানিম্যানের সুখ্যাতি ছিল। তিনি সর্ব প্রথম পারদ[২০] এর শক্তিকরণ (Dynamization) ও ব্যবহার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। হ্যানিম্যান এ সমন্ধে অনেক প্রবন্ধ ও বই রচনা করেন। অনেক বই অনুবাদও করেন। তার এসব অবদানের জন্য ক্রেল, গটলিং, স্কিরার, টম্স ডর্ফ, ক্রাউস, গমেলিন প্রমূখ বিখ্যাত প্রফেসর ও প্রখ্যাত রসায়নবিদ বার্জেলিয়াস[২১] ভূয়সী প্রশংসা করেন। হ্যানিম্যান শুধু রসায়নবিদই ছিলেন না, তিনি নিজেই ঔষধ আবিষ্কার, প্রস্তুত ও রোগীদেরকে প্রয়োগ করতেন। কিন্তু এ নতুন ঔষধ প্রস্তুত ও প্রচলন এবং একজন চিকিৎসক হয়ে নিজের ঔষধ নিজে প্রস্তুত করায় লিপজিকের অ্যালোপ্যাথি ঔষধ প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতারা হ্যানিম্যানের চরম বিরোধিতা করেন। এমনকি তাকে লিপজিগ থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন।

চিকিৎসাবিদ্যা অনুশীলন[২২]

[সম্পাদনা]

অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক

[সম্পাদনা]

হ্যানিম্যান তার পূর্বের আড়াই হাজার বছরের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস অধ্যয়ণ ও পর্যালোচনা করেন। তিনি ১৭৭৮-১৭৭৯ সাল পর্যন্ত ছাত্র অবস্থাতেই ট্রানসেলভেনিয়ার গভর্নরের পারিবারিক চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়া এসময় বাইরের রোগীও দেখতেন। কিন্তু এম.ডি ডিগ্রীধারী চিকিৎসক হিসেবে ১৭৮১ সালে তাম্রখনি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত ম্যান্সফিল্ড রাজ্যের হেটস্টেড শহরে সর্বপ্রথম চিকিৎসা পেশা শুরু করেন। ১৭৮১ সালের শেষ দিকে তিনি ম্যাগডিবার্গের নিকটবর্তী গোমেরন এ জেলা মেডিকেল অফিসার নিযুক্ত হন। এসময় তিনি প্রচলিত অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার কুফল ও অসারতা উপলব্ধি করে তার বিভিন্ন প্রবন্ধ ও বইতে এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেন। যেমন প্রবন্ধ ডা. ক্রেব[২৩] এর “চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা”[২৩] (১৭৮১),“ পুরাতন ক্ষত ও আলসার রোগের নির্দেশনা” (১৭৮৪), “চিকিৎসা বিদ্যার পুনর্জন্মের প্রয়োজন” ও বই “ স্ক্রফিউলা ক্ষত ও এর চিকিৎসা”। ১৭৮৫ সালে তিনি ড্রেসড্রেনে আসেন এবং ১ বছর শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেন ও চিকিৎসা আইনবিদ্যায় দক্ষতা অর্জন করেন। এসময় তিনি “আর্সেনিকের বিষক্রিয়া, এর চিকিৎসা ও বিচার বিভাগীয় সত্য উদ্‌ঘাটন” (১৭৮৬); “পিত্ত ও পিত্তপাথুরী” এবং “পচন নিরোধক একটা অসাধারণ শক্তিশালী ঔষধ” (১৭৮৮) নামে কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। ১৭৮৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিন লিপজিকে চিকিৎসা শুরু করেন। এসময় তার “ যৌন রোগে সার্জনদের প্রতি নির্দেশনা” (১৭৮৯) পুস্তিকা প্রকাশ পায়। ১৭৮৯ সালে “স্বাস্থের বন্ধু” বইতে স্বাস্থ বিধি ও জলাতংক রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন এবং “সিফিলিস প্রসংগে” প্রবন্ধে সিফিলিসে পারদের সূক্ষ্মমাত্রা ব্যবহারের নির্দেশ দেন।

হোমিওপ্যাথি আবিষ্কার ও চিকিৎসক

[সম্পাদনা]

হ্যানিম্যান তার সময়ের প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি বিরূপ ছিলেন এবং ঐ চিকিৎসার উদ্দেশ্য তাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছিল। তিনি দাবি করলেন যে তাকে যে ঔষধ সম্পর্কে শেখানো হয়েছে তা রোগীর ভালর চেয়ে বেশি ক্ষতিকর।

“এই সকল অজানা চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা আমার রোগভোগকারী ভাইদেরকে চিকিৎসা করতে আমার বিবেক আমাকে সহজেই অনুমোদন দেয় না। চিন্তাধারা এমনদিকে যাচ্ছিল যেন আমি একজন অনিষ্টকারী খুনি অথবা মানুষের অমঙ্গলসাধক, সুতরাং আমি আমার বিয়ের প্রথম বছরেই এই ভয়ানক চিকিৎসা পদ্ধতি ছেড়ে দেই এবং নিজেকে রসায়নশাস্ত্র ও অনুবাদকের কাজে নিয়োজিত করি”[১৫]

১৭৮৪ সালের দিকে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে দেবার পর হ্যানিম্যান লেখনী ও অনুবাদকের কাজ করে কষ্টেসৃষ্টে তার জীবন নির্বাহ এবং পাশাপাশি বিভিন্ন ঔষধে বর্ণিত চিকিৎসাগত অসঙ্গ��ি বের করার কাজও করেন। উইলিয়াম কুলেন[২৪] এর “এ ট্রিয়েট্রাইজ অন মেটেরিয়া মেডিকা” (A Treatise on the Materia Medica) বইটি অনুবাদ করার সময় হ্যানিম্যান পেরুভিয়ান বার্ক থেকে তৈরী ম্যালেরিয়া (malaria) জ্বরের জন্য “সিঙ্কোনা” (cinchona) নামক গাছের ছালের কার্যকারিতা দেখতে পান। হ্যানিম্যান বিশ্বাস করলেন যে ম্যালেরিয়া জ্বরে সিঙ্কোনা’র মত অন্যান্য সহায়ক উপাদান (astringent substances) ততটা কার্যকরী নয় এবং তাই তিনি “সিঙ্কোনা” (cinchona) গাছের বাকল এর কার্যকারীতা নিজদেহে পরীক্ষা করা শুরু করলেন, দেখলেন যে এটা ম্যালেরিয়ার মত তার দেহে [২৫] কম্পজ্বর উৎপন্ন করছে এবং এটা যে কোন সুস্থ দেহেই করতে সক্ষম। এ বিষয়টি তাকে একটি মৌলিক নীতির দিকে ধাবিত করে “ যা একজন সুস্থ ব্যক্তির উপর প্রয়োগের ফলে বিভিন্ন লক্ষণ সমষ্টির উৎপন্ন করতে পারে, তা একই রকম লক্ষন সমষ্টি সমৃদ্ধ অসুস্থ দেহে প্রয়োগ করলে নিরাময় করতে সক্ষম” [২৬] এটাই “লাইক কিউর লাইক” (like cures like) যা একটি নতুন ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচেষ্টা এবং তিনি এর নাম দেন হোমিওপ্যাথি। ১৮০৭ সালে হুফেলান্ড (Hufeland)[২৭] জার্নাল এ প্রকাশিত ইন্ডিকেশনস অব দ্যা হোমিওপ্যাথিক ইমপ্লয়মেন্ট অব মেডিসিনেস ইন অর্ডিনারি প্র্যাকটিস (Indications of the Homeopathic Employment of Medicines in Ordinary Practice) নামে এক প্রবন্ধে প্রথম “ হোমিওপ্যাথি” (homeopathy)[২৮] শব্দটি হ্যানিম্যান প্রথম ব্যবহার করেন। "২৫০০ বছরের চিকিৎসা ইতিহাসে শুধুমাত্র আলব্রেচ ফন হেলারই বুঝতে পেরেছিলেন যে এটাই প্রাকৃতিক পদ্ধতি, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং সঠিক ঔষধ প্রয়োগ পদ্ধতি যা মানুষের সঠিক স্বাস্থের উপর প্রভাব ফেলে এবং আমি তার পরবর্তী ব্যক্তি যে আবার এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি চালু করলাম"।[২৯]  হ্যানিম্যান পুরাতন চিকিৎসা পদ্ধতি অ্যালোপ্যাথিকে ওল্ড স্কুল এর চিকিৎসা পদ্ধতি বলে অভিহিত করতেন।[৩০] তিনি ১৭৯২ সালে টুরিংগেন জংগলে জর্জেন্থল এর পাগলা গারদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এখানে হ্যানিম্যান হ্যানোভার মন্ত্রী ক্লকেন ব্রিং এর বিষাদ উন্মাদ চিকিৎসা করেন। এ সময় তিনি রক্তমোক্ষণকারী চিকিৎসা ব্যবস্থা ও মানসিক রোগীর চিকিৎসার নির্যাতনমূলক পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করেন। [৩১]

হোমিওপ্যাথির উন্নয়ন

[সম্পাদনা]

১৮০১ সালে আরক্তজ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে তিনি “ বেলেডোনা” ব্যবহারের উপদেশ দেন। প্রুশিয়া সরকার এটা সব চিকিৎসক কে ব্যবহার করতে নির্দেশ দেন। এছাড়াও হ্যানিম্যান ১৮১৩ সালে জার্মানিতে টাইফাস ও হসপিটাল জ্বরে যথাক্রমে “ব্রায়োনিয়া” ও “রাসটক্স” ব্যবহারের পরামর্শ দেন।[৩১]

তিনি হোমিওপ্যাথির উন্নয়নে যে সকল পদ্ধতি প্রচলন করেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ১) পরীক্ষামূলক ও আরোগ্যকারী সদৃশবিধানে প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি (সিমিলিয়া-সিমিলিবাস-কিউরেন্টার)[৩২], ২) সুস্থ মানব দেহে ঔষধ পরীক্ষা করে ঔষধের কার্যকরী ক্ষমতা নির্ধারণ, ৩) চিকিৎসা ক্ষেত্রে জীবনীশক্তি তত্ত্বের আবিষ্কার [৩০] , ৪) রোগ সংক্রমণ তত্ত্ব ও কলেরার কারণ প্রসংঙ্গে জীবাণুতত্ত্বের পূর্বাভাষ ৫) চির বা স্থায়ী রোগ তত্ত্ব, ৬) অপরাধ তত্ত্ব ও অপরাধ প্রবণতা, ৭) রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পদ্ধতি, ৮) মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি ও নির্যাতনমূলক চিকিৎসার বিরোধিতা, ৯) ঔষধের শক্তিকরণ ও নতুন শক্তিকরণ পদ্ধতি (৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতি), ১০) ঔষধকে শক্তিকৃত ও অবিমিশ্রিত অবস্থায় সূক্ষ্ম পরিবর্তিত মাত্রায় প্রয়োগ, ১১) পথ্যবিজ্ঞানে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি- খাদ্যতত্ত্ব ও পথ্যাপথ্যেও প্রয়োজনীয়তা, ১২) স্বাস্থ্যতত্ত্ব ও নাগরিক স্বাস্থ্য - পাগলাগারদ, এতিমখানা ও জেলের স্বাস্থ্যবিধির দুর্দশা এবং ব্যয়াম সহ স্বাস্থ রক্ষার নিয়মাবলী, ১৩) সার্জারিতে ড্রাই ড্রেসিং ও অস্থি চাঁচন পদ্ধতি, ১৪) পারদকে দ্রবীভূত করা ও এর সূক্ষ্ম উগ্রতাবিহীন প্রস্তুতি ও সফল ব্যবহার, আর্সেনিকের ক্রিয়া প্রসংগ ও চিকিৎসা আইনে রাসায়নের অবদান, মদে ভেজাল নির্ধারণ পদ্ধতি, বিষের ব্যবহার ও সংরক্ষণ বিধি, ব্যবস্থাপত্রের বিধি, ভেষজের জলীয় অংশ নিষ্কাশন, বাষ্পীয় পাতন ও তরল মাধ্যমে ভেষজের নির্যাসের বাষ্পীয়ভবন, টাটকা গাছ থেকে আরক তৈরী, ইত্যাদি। তিনি রোগ ও ঔষধের লাক্ষণিক উৎস আবিষ্কার করে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে  বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন। [৩৩]

পরিবার পরিজন[৩৪]

[সম্পাদনা]
জোহনা হেনরিয়েটি লিওপোলডিনি কুসলার

প্রথম স্ত্রী জোহনা হেনরিয়েটি লিওপোলডিনি কুসলার[৩৫] যাকে হ্যানিম্যান ২৮ বছর বয়সে বিবাহ করেন, তখন জোহনা হেনটিয়েটির বয়স ছিল ১৯ বছর, ১৭৮২ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়। এঁর গর্ভে হ্যানিম্যানের ৯ কন্যা ও ২ পুত্রের জন্ম হয়।

মেলানি ডি হারভিলি

দ্বিতীয় স্ত্রী মাদাম মেরী মেলানী ডি. হারভিলী[৩৬] হ্যানিম্যান ৮০বছর বয়সে বিবাহ করেন, তখন ম্যালানী ডি. হারভিলীর বয়স ছিল ৩২ বছর, ১৮৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারী তাদের বিয়ে হয়। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী, ধনবতী, বিশিষ্ট চিত্রকর ও নামকরা কবি। হ্যানিম্যানের জীবনের চরম সাফল্যের দিনগুলিতে তিনি সুযোগ্য সহধর্মিণী হিসেবে যথেষ্ট অবদান রাখেন। শেষ জীবনে তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা প্রদান করতেন।

১) প্রথম কন্যাঃ হেনরিয়েটি , এর গর্ভে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে।

২) প্রথম পুত্রঃ ফ্রেড্রিক , তিনি ভাই বোনদের মাঝে দ্বিতীয় এবং হ্যানিম্যানের প্রথম ছেলে। শিশুকালে রিকেট রোগের কারণে তার বুক উচু ও মেরুদন্ড বাঁকা হয়ে যায়। তিনি ১৮০৮ সাল থেকে লিপজিক বিশ^বিদ্যালয়ে পড়তেন এবং ২৬ বছর বয়সে চিকিৎসা বিদ্যায় ‘ডক্টরেট ডিগ্রী’ এম.ডি লাভ করেন। আর্জ পর্বতশ্রেণীর ভলকেনস্টেইন এ তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান আরম্ভ করেন। তিনি হল্যান্ড ও হামবুর্গে চিকিৎসা করার পর ইংলেন্ডে চলে যান। কিন্তু ১৮২৮ সালের পর তাকে আর পাওয়া যায় নি।

৩) ভিলহেলমিনি ইনি হ্যানিম্যানের দ্বিতীয়া কন্যা, তার গর্ভে এক পুত্রের জন্ম হয়।

৪) অ্যামেলি [৩৭] অ্যামেলি ছিলেন হ্যানিম্যানের তৃতীয়া কন্যা। তার প্রথম বিবাহ হয় ডা. লিওপোল্ড সাসের সঙ্গে। তার ঔরসে লিওপোল্ড সাস হ্যানিম্যান (১৮২৬-১৯১৪) নামে এক পুত্রের জন্ম হয়। তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ছিলেন।চিকিৎসা করতেন ইংল্যান্ডের ভেন্টরে। পরবর্তীকালে অ্যামেলি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন লিবে নামক এক মিল পরিদর্শক কে। কিন্তু লিবে তাকে পরে তালাক দেন।

৫) ক্যারোলিনি হ্যানিম্যানের এ চতুর্থা কন্যা অবিবাহিতা অবস্থায় ১৮৩১ সালের পূর্বে আততায়ীর হাতে নিহত হয়।

৬) আর্ণষ্ট একই বছর জন্ম ও মৃত্যু। হ্যানিম্যান যখন মোল্সক্লিবেন থেকে পিরমেন্টে যাচ্ছিলেন তখন মূলহৌসেন নামক স্থানে শকট ( ঘোড়া গাড়ী) দুর্ঘটনায় তার এ দ্বিতীয় পুত্রের মৃত্যু ঘটে।

৭) ফ্রেড্রিকি হ্যানিম্যানের এ পঞ্চমা কন্যার দু’বার বিয়ে হয়। আততায়ীর হাতে তিনি মারা যান।

৮) হ্যানিম্যানের পঞ্চমা কন্যা (১৭৯৫) ফ্রেড্রিকির সাথে অপর এক জমজ কন্যা মৃত অবস্থায় জন্মেছিল।

৯) ইলিওনোরি তিনি হ্যানিম্যানের সপ্তম কন্যা। তার দুইবার বিয়ে হয়েছিল, প্রথম স্বামীর নাম হের ক্লেমান । দ্বিতীয় স্বামীর নাম ডা. উলফ । তবে পরে ডা. উল্ফ তাকে তালাক দিয়েছিলেন। ইলিওনোরি হোমিওপ্যাথিক এ্যাডভাইসর ফর দ্যা হোম (Homoeopathic Advisor for the Home) পুস্তক প্রকাশ করেন।

১০) চার্লেটি[৩৫] হ্যানিম্যানের অষ্টমা কন্যা চার্লেটি অবিবাহিতা ছিলেন।

১১) লুুইসি হ্যানিম্যানের নবমা কন্যা লুইসি। হ্যানিম্যানের সহকারী ডা. মসডর্ফের সাথে লুইসির বিয়ে হয়। কিন্তু মসডর্ফ তাকে তালাক দ���ন। হ্যানিম্যানের দ্বিতীয় স্ত্রী মাদাম মেলানী ডি. হারভিলির গর্ভে কোন সন্তান জন্মেনি।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

হ্যানিম্যান ১৮৪৩ সালের ২ জুলাই রোববার ভোর ৫ ঘটিকার সময় প্যারিসে নিজের ঘরে রুই দ্য মিলান নং -১ স্থানে মৃত্যুবরণ করেন। জীবনের শেষ বিশ ( ডা. হুল ও ডা. ব্রাডফোর্ড এর মতে; দশ) বছর তিনি প্রতি বসন্তে শ্বাস নালীর সর্দি (Bronchial Catarrh)রোগে আক্রান্ত হতেন। জীবনের শেষ মূহুর্তে ১৩ ঘণ্টা ধরে ক্রমান্বয়ে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়ে শ্বাস রোধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। ১৮৪৩ সালে প্যারিসের মন্টমার্টরী পর্বতের সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাহিত করা হয়।[৩৮] পরবর্তীতে ৫৫ বছর পর ১৮৯৪ সালে তাকে খ্রিষ্টান মতে পিয়ের ল্যাসেইসি সিমেটেরিতে দাফন ও বিভিন্ন স্থানে মুর্তিসহ ৯টি স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়। [৩৯]

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]

আরো পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Brockmeyer, Bettina (২০০৭)। "Representations of illness in letters addressed to Samuel Hahnemann: gender and historical perspectives"। Medizin, Gesellschaft, und Geschichte : Jahrbuch des Instituts für Geschichte der Medizin der Robert Bosch Stiftung (German ভাষায়)। 29: 211–221, 259। পিএমআইডি 18354994 
  • Kayne, Steven (২০০৬)। "Samuel Hahnemann (1755–1843): the founder of modern homeopathy."। Pharmaceutical historian36 (2 Suppl): S23–6। পিএমআইডি 17153748 
  • Brockmeyer, Bettina (২০০৫)। "Writing about oneself and others: men and women in letters to doctor Samuel Hahnemann 1831–1835"। Würzburger medizinhistorische Mitteilungen / im Auftrage der Würzburger medizinhistorischen Gesellschaft und in Verbindung mit dem Institut für Geschichte der Medizin der Universität Würzburg (German ভাষায়)। 24: 18–28। পিএমআইডি 17153289 
  • "Biographic synopsis on Samuel Hahnemann"। Revista de enfermería (Barcelona, Spain) (Spanish ভাষায়)। 28 (3): 10–16। ২০০৫। পিএমআইডি 15871338 
  • Eschenbruch, Nicholas (২০০৫)। "Rationalist, magician, scharlatan? Samuel Hahnemann and homeopathy from the viewpoint of homeopathy"। Schweiz. Rundsch. Med. Prax. (German ভাষায়)। 94 (11): 443–446। পিএমআইডি 15822443 
  • Jutte, R. (১৯৯৯)। ""Thus it passes from the patient's purse into that of the doctor without causing displeasure" – Samuel Hahnemann and medical fees"। Medizin, Gesellschaft, und Geschichte : Jahrbuch des Instituts für Geschichte der Medizin der Robert Bosch Stiftung (German ভাষায়)। 18: 149–167। পিএমআইডি 11624613 
  • de Goeij, C. M. (১৯৯৪)। "Samuel Hahnemann: an indignant systems builder"। Nederlands tijdschrift voor geneeskunde (Dutch ভাষায়)। 138 (6): 310–314। পিএমআইডি 8121514 
  • Rizza, E. (১৯৯৪)। "Samuel Hahnemann: a mystical empiricist. A study of the origin and development of the homeopathic medical system"। Medicina nei secoli (Italian ভাষায়)। 6 (3): 515–524। পিএমআইডি 11620590 
  • Meissner, M. (১৯৯২)। "Samuel Hahnemann—the originator of homeopathic medicine"। Krankenpflege Journal30 (7–8): 364–366। পিএমআইডি 1405462 
  • Schmidt, J. M. (১৯৮৮)। "The publications of Samuel Hahnemann"। Sudhoffs Archiv72 (1): 14–36। পিএমআইডি 2970128 
  • Lozowski, J. (১৯৮২)। "Homeopathy (Samuel Hahnemann)"। Pielȩgniarka i połozna (Polish ভাষায়) (4–5): 16–17। পিএমআইডি 6750668 
  • Habacher, M. (১৯৮০)। "Homöopathische Fernbehandlung durch Samuel Hahnemann"। Medizinhistorisches Journal (German ভাষায়)। 15 (4): 385–391। পিএমআইডি 11610925 
  • Antall, J.; Kapronczay, K. (১৯৭৩)। "Samuel Hahnemann"। Orvosi hetilap114 (32): 1945–1947। পিএমআইডি 4581537 
  • Hodges, P. C. (১৯৬৪)। "Homeopathy and Christian Friedrich Samuel Hahnemann"Postgraduate Medicine35: 666–668। পিএমআইডি 14143315 
  • Dietrich, H. J. (১৯৫৮)। "Hahnemann's capacity for greatness; Samuel Hahnemann; and Hahnemann Medical College"। The Hahnemannian93 (2): 35–39। পিএমআইডি 13562700 
  • Koch, E. (১৯৫৫)। "On the 200th anniversary of Dr. Samuel Hahnemann; several ideas concerning homeopathy"। Das Deutsche Gesundheitswesen (German ভাষায়)। 10 (16): 585–590। পিএমআইডি 14379841 
  • Auster, F. (১৯৫৫)। "200th Anniversary of the birth of Dr. Samuel Hahnemann, born April 10, 1755"। Pharmazeutische Zentralhalle für Deutschland (German ভাষায়)। 94 (4): 124–128। পিএমআইডি 14384489 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
  1. ওপেন লাইব্রেরিতে স্যামুয়েল হ্যানিম্যান-এর সৃষ্টিকর্ম
  2. Life History of Samuel Hahnemann
  3. Life History of Samuel Hahnemann
  4. Christian Friedrich Samuel Hahnemann A historical overview
  5. চরম দারিদ্রতা ভরা ছিল হ্যানিম্যানের জীবন পড়ুন হ্যানিমানের জীবনের ইতিহাস
  6. Hahnemann Building, Hope Street, Liverpool former site of the Hahnemann Hospital, Liverpool
  7. Wikisource রিপলি, জর্জ; ডানা, চার্লস এ., সম্পাদকগণ (১৮৭৯)। "[[s:New American Cyclopædia (1879)/|]]"। নিউ আমেরিকান সাইক্লোপিডিয়া  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)[[বিষয়শ্রেণী:উইকিপিডিয়া নিবন্ধ একটি নামহীন পরামিতিসহ নিউ আমেরিকান সাইক্লোপিডিয়া থেকে একটি উদ্ধৃতি অন্তর্ভুক্ত]]
  8. A digitized copy of Hahnemann's personal 5th edition with handwritten notes for the 6th edition
  1. Hahnemann, Samuel (১৮১০)। Organon der rationellen Heilkunde। Dresden: Arnoldsche Buchhandlung। 
  2. Brief History of Life of Samuel Hahnemann, The Father of Homoeopathy. Homoeoscan.com. 10 April 2014
  3. http://www.homeoint.org/morrell/articles/biohahnemann.htm
  4. Cook, 28
  5. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; p-111
  6. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-111
  7. to: a b c d "Hahnemann Biography". Retrieved 2009-01-13.
  8. [Haehl, vol. 1, 20] http://www.homeoint.org/morrell/articles/biohahnemann.htm
  9. [Haehl, vol. 1, 11]http://www.homeoint.org/morrell/articles/biohahnemann.htm
  10. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৮ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০২১ 
  11. https://en.wikipedia.org/wiki/Hippocrates
  12. Cook, p. 36.
  13. Richard Haehl (1922). Samuel Hahnemann His Life and Work. 2. London: Homoeopathic Publishing. p. 11. OCLC 14558215
  14. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-117
  15. "Hahnemann Biography". Retrieved 2009-01-13.
  16. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-118
  17. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-১২৫-১২৬
  18. http://www.wikiwand.com/en/Homeopathic_Materia_Medica
  19. হোমিওপ্যাথি, প্রিন্সিপাল অব (১৯৮৮)। প্রিন্সিপাল অব হোমিওপ্যাথি। হাসান বুক, বাড়ী ৬৫, প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা: ডা. রওশন আরা। পৃষ্ঠা ১১৮। 
  20. http://hyperphysics.phy-astr.gsu.edu/hbase/pertab/Hg.html
  21. https://en.wikipedia.org/wiki/J%C3%B6ns_Jacob_Berzelius
  22. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-120-122
  23. Samuel Hahnemann; his life and work, based on recently discovered state papers, documents, letters, etc. Translated from the German by Marie L. Wheeler and W.H.R. Grundy. Edited by J.H. Clarke & F.J. Wheeler" page 29
  24. https://en.wikipedia.org/wiki/William_Cullen
  25. Haehl, vol. 1, p.38; Dudgeon, p.48
  26. "Hahnemann Biography". Retrieved 2009-01-13
  27. https://en.wikipedia.org/wiki/Christoph_Wilhelm_Hufeland
  28. https://en.wikipedia.org/wiki/Homeopathy
  29. অর্গানন অব মেডিসিন- ৬ষ্ঠ সংস্করণ এর ১০৮ নং এ্যাফরিজমের ১ নং টিকা (Not one single physician, as far as I know, during the previous two thousand five hundred years, thought of this so natural, so absolutely necessary and only genuine mode of testing medicines for their pure and peculiar ef fects in deranging the health of man, in order to learn what morbid state each medicine is capable of curing, except the great and immortal Albrecht von Haller. He alone, besides myself, say the necessity of this (vide the Preface to the Pharmacopoeia Helvet., Basil, 1771, fol., p. 12); Nempe primum in corpore sano medela tentanda est, sine peregrina ul la miscela; odoreque et sapore ejus exploratis, exigua illius dosis ingerenda et ad omn es, quae inde contingunt, affectiones, quis pulsus, qui calor, quae respiratio, quaenam ex cretiones, attendendum. Inde ad ductum phaenomenorum, in sano obviorum, transeas ad experimenta in corpore aegroto, ..etc. But no one, not a single physician, attended to or followed up this invaluable hint.) [Organon of Medicine 6th Edition 1810; 1st Published 1921 in English; Translation copyright © 1982 by The Hahnemann Foundation]
  30. (অর্গানন অব মেডিসিন- সুত্র ৬ এর টিকা [Organon of Medicine 6th Edition 1810; 1st Published 1921 in English; Translation copyright © 1982 by The Hahnemann Foundation])
  31. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-121
  32. https://it.wikipedia.org/wiki/Similia_similibus_curantur
  33. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-124-125
  34. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-112-114
  35. http://www.homeoint.org/books4/bradford/family.htm
  36. Haehl, Richard; Wheeler, Marie L. (tr.) and Grundy, W.H.R. (tr.) (১৯২২)। John Henry Clarke, Francis James Wheeler, সম্পাদক। Samuel Hahnemann his Life and Work1। London: Homoeopathic Publishing। ওসিএলসি 222833661 , reprinted as আইএসবিএন ৮১-৭০২১-৬৯৩-১- page 223
  37. All. Hom. Zeitung, Vol. IV, p. 144. (December 14, 1857.)
  38. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; homeopathyworldcommunity.com নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  39. A Tex Book of Principles of Homoeopathy by M.M. Abul Monsur & Gurudas Sarkar 2nd edition 21 feb 1999; Published By Hassan Book House, 65, Pyaridas Road, Banglabazar, Dhaka-1000, Bangladesh; P-115