শশীকলা
শশীকলা | |
---|---|
জন্ম | শশীকলা জওয়ালকর ৮ জানুয়ারি ১৯৩৩ |
মৃত্যু | ৪ এপ্রিল ২০২১ মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স ৮৮)
অন্যান্য নাম | শশীকলা ওমপ্রকাশ সায়গল |
কর্মজীবন | ১৯৪৪-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | ওমপ্রকাশ সায়গল |
সন্তান | ২ |
শশীকলা ওমপ্রকাশ সায়গল (বিবাহপূর্ব জওয়ালকর; ৮ জানুয়ারি ১৯৩৩ - ৪ এপ্রিল ২০২১)[১] হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী। তিনি এক শতাধিক বলিউড চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি আটটি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং তন্মধ্যে আরতি (১৯৬২) ও গুমরাহ (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দুটি পুরস্কার লাভ করেন। তার ফিল্মফেয়ারের মনোনয়ন প্রাপ্ত বাকি চলচ্চিত্রগুলো হল সুজাতা (১৯৫৯), আয়ি মিলন কী বেলা (১৯৬৪), হিমালয় কী গোদ মেঁ (১৯৬৫), ফুল অউর পাত্থর ও অনুপমা (১৯৬৬), এবং নীল কমল (১৯৬৮)। ১৯৬৩ সালের আয়োজন থেকে ১৯৬৭ সালের আয়োজন পর্যন্ত সর্বাধিক টানা ছয়টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন রেকর্ড রয়েছে তার। ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত করে।[২]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]শশীকলা জওয়ালকর ১৯৩৩ সালের ৮ জানুয়ারি মহারাষ্ট্র রাজ্যের সোলাপুরে এক মারাঠি ভাষী হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৫ বছর বয়সে তিনি সোলাপুর জেলার বিভিন্ন মেলায় নৃত্য, সঙ্গীত ও অভিনয় পরিবেশন শুরু করেন। শশীকলা কৈশোরে পৌঁছার আগেই তার পিতা দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং তারা সপরিবারে বম্বে (বর্তমান মুম্বই) চলে আসেন। তার পরিবার ভেবেছিল শশীকলা সেখানে চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ পাবে। কিছু সময়ের জন্য তারা তাদের বন্ধুদের সাথে অবস্থান করে এবং শশীকলা এক স্টুডিও থেকে অন্য স্টুডিওতে কাজের জন্য ঘুরে বেড়ান। তিনি ছোট-খাট চরিত্রে কাজ করতে থাকেন এবং সে সময়ের শীর্ষ অভিনেত্রী নূর জীহানের সাথে তার পরিচয় হয়। নূর জাহানের স্বামী শওকত হুসেন রিজভী তখন জিনা�� (১৯৪৫) চলচ্চিত্র নির্মাণ করছিলেন, তিনি তাকে একটি কাওয়ালি গানের দৃশ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন। চলচ্চিত্রটি উর্দু ভাষায় নির্মিত হয়েছিল, ফলে তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উর্দু ভাষা শিখতে হয়। এই কাজের জন্য তিনি ২৫ রুপী পারিশ্রমিক পান।[৩] এই সময়ে তিনি কুন্দন লাল সায়গল পরিবারের ওমপ্রকাশ সায়গলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার বিশের ঘরের প্রারম্ভিক বয়সেই তাদের দুই কন্যার জন্ম হয়।[৩]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]শশীকলা ভারত বিভাজনের পূর্বে পি. এন. অরোরা, অমিয় চক্রবর্তী ও অন্যান্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাথে মাসিক ৪০০ রুপী পারিশ্রমিকে কাজ করেন। এই সময়ে তিনি অশোক কুমার ও করণ দেওয়ানের বিপরীতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি ভি. শান্তরামের তিন বাত্তি চার রাস্তা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। এছাড়া তিনি শাম্মী কাপুরের সাথে ডাকু (১৯৫৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন।[৩] ১৯৫৯ সালে তিনি সুজাতা চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
১৯৬২ সালে তিনি তারাচাঁদ বড়জাত্যার আরতি চলচ্চিত্র মীনা কুমারী, অশোক কুমার ও প্রদীপ কুমারের সাথে খল চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি সুপারহিট হয় এবং তিনি এই কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। এই চলচ্চিত্রের সফলতার পর তার নিকট আরও চলচ্চিত্রের প্রস্তাব আসতে শুরু করেন। পরের বছর তিনি গুমরাহ (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে টানা দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন।[৩] পরবর্তী কালে তিনি আয়ি মিলন কী বেলা (১৯৬৪), হিমালয় কী গোদ মেঁ (১৯৬৫), ফুল অউর পাত্থর ও অনুপমা (১৯৬৬), এবং নীল কমল (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আরও পাঁচটি ফিল্মফেয়ারের মনোনয়ন লাভ করেন।
পুরস্কার ও মনোনয়ন
[সম্পাদনা]- রাষ্ট্রীয় সম্মাননা
- ২০০৭: ভারত সরকার কর্তৃক শিল্পকলায় পদ্মশ্রী
- ২০০৯: ভি. শান্তরাম আজীবন সম্মাননা পুরস্কার[৪]
- ২০১৭: মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক প্রদত্ত রাজ কাপুর আজীবন সম্মননা পুরস্কার[৫][৬]
বিজয়ী
- ১৯৬৩: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - আরতি (১৯৬২)
- ১৯৬৪: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - গুমরাহ (১৯৬৩)
মনোনীত
- ১৯৬০: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - সুজাতা (১৯৫৯)
- ১৯৬৫: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - আয়ি মিলন কী বেলা (১৯৬৪)
- ১৯৬৬: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - হিমালয় কী গোদ মেঁ (১৯৬৫)
- ১৯৬৭: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - ফুল অউর পাত্থর ও অনুপমা (১৯৬৬)
- ১৯৬৯: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - নীল কমল (১৯৬৮)
- ১৯৬৩: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী (হিন্দি) - আরতি (১৯৬২)[৭]
- ১৯৬৪: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী (হিন্দি) - গুমরাহ (১৯৬৩)[৮]
- ১৯৭০: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী (হিন্দি) - রাহগির (১৯৬৯)[৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Shashikala News | Latest News of Shashikala"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Padma Awards Directory (1954-2009)" (পিডিএফ)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারত সরকার। ১০ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ পাতিল, বিমলা (৭ মার্চ ১৯৯৯)। "Peace that surpasseth understanding" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ট্রিবিউন। পৃষ্ঠা সানডে রিডিং। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Turn it up, folks"। ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Maha Govt's Raj Kapoor awards for Shashikala, Vidya Balan"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Lifetime Marathi honour for Shashikala"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "26th Annual BFJA Awards"। বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার। ৮ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "27th Annual BFJA Awards"। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "33rd Annual BFJA Awards"। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০২০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে শশীকলা (ইংরেজি)