মেঘনা সেতু
মেঘনা সেতু | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২৩°৩৬′২৯″ উত্তর ৯০°৩৬′৪৭″ পূর্ব / ২৩.৬০৮০৬° উত্তর ৯০.৬১২৯৩° পূর্ব |
বহন করে | মটোর যান এবং পথচারী |
অতিক্রম করে | মেঘনা নদী |
স্থান | মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক নাম | বাংলাদেশ-জাপান মৈত্রী সেতু-১ |
বৈশিষ্ট্য | |
নকশা | খিলান সেতু |
উপাদান | পূর্বপ্রতিবলিত কংক্রিট |
মোট দৈর্ঘ্য | ৯০০ মিটার (২,৯৫২ ফু ৯ ইঞ্চি) |
প্রস্থ | ৯.২ মিটার (৩০ ফু ২ ইঞ্চি) |
দীর্ঘতম স্প্যান | ৮৭ মিটার (২৮৫ ফু ৫ ইঞ্চি) |
ইতিহাস | |
নির্মাণকারী | নিপ্পন কোই কো. লিমিটেড [১] |
চালু | ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ |
অবস্থান | |
মেঘনা সেতু বাংলাদেশের একটি সড়ক সেতু।[১] জাপানের সহায়তায় নির্মিত এই সেতুর আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১, তবে এটি মেঘনা সেতু নামেই পরিচিত।[২] বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস কর্তৃক ২০০৪ সালে পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যায় মেঘনা সেতুর আশেপাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের এই সেতু নির্মাণে বিভিন্ন ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।[৩]
অবস্থান
[সম্পাদনা]মেঘনা সেতু দক্ষিণ ঢাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার[২] দূরে দেশের প্রধান নদী[৪] মেঘনা নদীতে অবস্থিত।[৪][৫] সেতুটি ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পাশাপাশি অবস্থিত।[২] সেতুর ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ২৩°৩৬.১৬২′ উত্তর ৯০°৩৬.৯৯১′ পূর্ব / ২৩.৬০২৭০০° উত্তর ৯০.৬১৬৫১৭° পূর্ব।[৪]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় মেঘনাসেতু নির্মিত হয়।[৬][৭] সেতুটি নির্মানে কাজ করে জাপানের নিপ্পন কোয়েই কো. লি.[১] যারা বিশ্বের আশিটিরও বেশি দেশে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করেছে।[৮] ১৯৯১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। মেঘনা সেতু জাপানের সহায়তায় নির্মিত পৃথিবীর একক বৃহত্তম প্রকল্প।[৯] ২০০৫ সালে সেতুটিতে বড় ধরনের মেরামত কাজ পরিচালনা করা হয় কারণ যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এবং অধিক ওজনের যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটির বেশকিছু অংশে সম্প্রসারণ সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলো।[৬]
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]সেতুটি ক্যাণ্টিলিভার এবং গার্ডারে নির্মিত যার উভয় দিক থেকে যান চলাচল করতে পারে। সেতুটির ১৩টি স্প্যানের মধ্যে দুটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ২৪.২৫ মিটার (৭৯ ফুট ৭ ইঞ্চি), একটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ৪৮.৩ মিটার (১৫৮ ফুট ৬ ইঞ্চি), নয়টি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ৮৭ মিটার (২৮৫ ফুট ৫ ইঞ্চি) এবং বাকি একটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৮.২ মিটার (৫৯ ফুট ৯ ইঞ্চি)। সেতুর মূল সড়কপথের দৈর্ঘ্য ৭.২ মিটার (২৩ ফুট ৭ ইঞ্চি)। সেতুটির স্থাপনা নদীতলে গেঁথে দেওয়া আরসিসি প্রকোষ্ঠ এবং পাইলের উপর করা হয়েছে। সেতুটির পিলার এবং ভারবাহী স্তম্ভগুলো নির্মিত হয়েছে আরসিসি দিয়ে।[১০] ষড়ভুজ আকৃতির সেতুটির একেকটি ভারবাহী স্তম্বের দৈর্ঘ্য ১১ মিটার (৩৬ ফুট ১ ইঞ্চি) এবং প্রস্থ ৩.২ মিটার (১০ ফুট ৬ ইঞ্চি)। পিলারের সাথে যুক্ত সেতুটির পার্শ্ব দেয়াল আরসিসি দিয়ে তৈরি। আরসিসি পোস্ট প্রকৃতির মেঘনা সেতুর রেলিং স্টিলের তৈরি। সেতুটির উভয়দিকে হাঁটার জন্য ০.৮০ মিটার (২ ফুট ৭ ইঞ্চি) প্রস্থ পায়ের চলার পথ (ফুটপাথ) রয়েছে। সেতুটিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
[সম্পাদনা]সেতুটি উদ্বোধনের পর এই সেতুতে এবং ১ নং জাতীয় মহাসড়কে যান চলাচল উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। তবে ২০০২ সালে সেতুটিতে চলার জন্য টোলের পরিমাণ বৃদ্ধির পেলে যান চলাচল কমে আসে।[৩] ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে ২৪ ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১০,১৪৯ টি সব ধরনের যানবাহন সেতুটি অতিক্রম করে। ২০০৪ সালের মার্চে ৯৭০৪ টি যানবাহন গড়ে প্রতিদিন এই সেতুটি অতিক্রম করে।
যানবাহন[৩] | ট্রাক[৩] | বাস[৩] | হালকা যান[৩] | মোটরসাইকেল[৩] | মোট[৩] |
---|---|---|---|---|---|
এপ্রিল ১৯৯৭ | ৪,৬৭৪ | ৩,৩৯৬ | ১,৭৯৬ | ২৮৩ | ১০,১৪৯ |
মার্চ ২০০৪ | ৪,৩১০ | ৩,৮৮৭ | ১,০৩০ | ৪৭৭ | ৯,৭০৪ |
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
মেঘনা সেতু থেকে নদীর অপরূপ দৃশ্য
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ স্ট্রাকচারে Meghna Bridge (ইংরেজি)
- ↑ ক খ গ বাংলাদেশের সেতুগুলির নৈকট্যে নদী গঠনের উপর প্রধান বন্যার প্রভাব (ইংরেজি)
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ The basic study on the present situation of the previous grant aid project for the bridges in Bangladesh ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ জুলাই ২০১১ তারিখে বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস
- ↑ ক খ গ Morphological Characteristics Of The River Meghna: A Collaborative Study ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ মে ২০০৫ তারিখে পানি সম্পদ গবেষণা কেন্দ্র, দুর্যোগ প্রতিরোধ গবেষণা ইনস্টিট���উট, কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়
- ↑ Padma Multipurpose Bridge Design Project ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক
- ↑ ক খ Ferry service on Dhaka-Ctg highway from Sept 10 দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)
- ↑ Yen Loans for Constructing Access Roads to the Jamuna Bridge ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য জাপান ব্যাংক
- ↑ Nippon Koei Co. Ltd. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ জুলাই ২০০৬ তারিখে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং ফার্মস অ্যাসোসিয়েশন (ইসিএফএ), জাপান
- ↑ নাগেন্দ্র কে. সিং (২০০৩)। Encyclopaedia of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। আনমোল পাবলিকেশন্স প্রাঃ লিমিঃ। পৃষ্ঠা ২৯৩। আইএসবিএন 81-261-1390-1।
- ↑ Principal Bridge Inspection Report ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুলাই ২০১১ তারিখে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ(ইংরেজি)