বিষয়বস্তুতে চলুন

মুখ্য উপনিষদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উপনিষদের একটি পাতা

মুখ্য উপনিষদ অথবা প্রধান উপনিষদ হিন্দুধর্মের সবচেয়ে প্রাচীন ও ব্যাপকভাবে অধীত ও আলোচিত উপনিষদ। ৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে সাধারণ যুগের শুরুর মধ্যে রচিত, এই উপনিষদগুলো বৈদিক ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত।[]

বিষয়বস্তু

[সম্পাদনা]

মুখ্য উপনিষদগুলো সম্ভবত ৬০০ ও ৩০০ খৃষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে রচিত হয়েছিল, এবং বেদের অন্তভাগে এগুলো রয়েছে।[] অধিকাংশ হিন্দু পণ্ডিত দশটি উপনিষদকে মুখ্য উপনিষদ হিসাবে বিবেচনা করেন, কিন্তু বর্তমানে কিছু পণ্ডিত এই তালিকায় শ্বেতাশ্বেতরকৌষীতকি ও  মৈত্রায়ণীয়কে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।[][][] বেদান্তের প্রধান বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা, যেমন, আদি শঙ্করমধ্বাচার্য এই দশটি প্রধান উপনিষদের উপর ভাষ্য লিখেছেন। যদিও রামানুজ মুখ্য উপনিষদের উপর স্বতন্ত্র ভাষ্য লেখেননি, তবুও তিনি তাঁর শ্রী ভাষ্যে উপনিষদের শত শত মন্ত্র উদ্ধৃত করেছেন। রামানুজের বংশে, তার অনুসারী, রঙ্গারামানুজ, ১৬০০-এর দশকের প্রায় সমস্ত প্রধান উপনিষদের উপর ভাষ্য লিখেছিলেন।[][]

মুখ্য উপনিষদগুলো সকল হিন্দুদের দ্বারা শ্রুতি বা হিন্দুধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ হিসেবে গৃহীত হয়।[] প্রধান উপনিষদগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে: গদ্য (তৈত্তিরীয়, ঐতরেয়,  ছান্দোগ্য, বৃহদারণ্যক, মাণ্ডুক্য) ও পদ্য (ঈশ, কঠ,  মুণ্ডক) এবং গদ্য-পদ্য উভয়ে রচিত (কেন, প্রশ্ন)।[]

মূখ্য উপনিষদসমূহ

[সম্পাদনা]
দশটি মূখ্য উপনিষদ
শিরোনাম মুক্তিকা ক্রমিক সংযুক্ত বেদ রচনার সময়কাল
ঈশোপনিষদ প্রথম যজুর্বেদ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের প্রথম ভাগ[]
কেন উপনিষদ দ্বিতীয় সামবেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দ[]
কঠোপনিষদ তৃতীয় যজুর্বেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দ[১০]
অথবা
খ্রিস্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দের প্রথম ভাগ
প্রশ্নোপনিষদ চতুর্থ অথর্ববেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দের দ্বিতীয়ার্ধে
মুণ্ডক উপনিষদ পঞ্চম অথর্ববেদ কালক্রম অস্পষ্ট[]
মাণ্ডুক্য উপনিষদ ষষ্ঠ অথর্ববেদ আনুঃ প্রথম বা দ্বিতীয় খ্রিস্টাব্দ[]
অথবা
সাধারণ যুগের প্রথম দুই শতাব্দী[১১]
অথবা
খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের প্রথম ভাগ[১২]
অথবা
অষ্টম শতাব্দী[১৩]
তৈত্তিরীয় উপনিষদ সপ্তম যজুর্বেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী[১৪]
ঐতরেয় উপনিষদ অষ্টম ঋগ্বেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতাব্দী[১৫][১৬]
ছান্দোগ্য উপনিষদ নবম সামবেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব ৮ম থেকে ৬ষ্ঠ শতাব্দী[][১৭]
বৃহদারণ্যক উপনিষদ দশম যজুর্বেদ আনুঃ খ্রিস্টপূর্ব নবম থেকে ষষ্ঠ শতাব্দী[১৮][১৯][২০]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. William K. Mahony (১৯৯৮)। The Artful Universe: An Introduction to the Vedic Religious Imagination। State University of New York Press। পৃষ্ঠা 271। আইএসবিএন 978-0-7914-3579-3 
  2. Brereton, Joel (১৯৯০)। de Bary, William Theodore; Bloom, Irene, সম্পাদকগণ। The UpanishadsApproaches to the Asian Classics। New York: Columbia University Press। পৃষ্ঠা 115-135। আইএসবিএন 0231070047 
  3. John G. Arapura (২০১২)। Gnosis and the Question of Thought in Vedānta: Dialogue with the Foundations। Springer। পৃষ্ঠা 57। আইএসবিএন 978-94-009-4339-1 ; Quote: "These are the Isa, Kena, Katha, Prasna, Mundaka, Mandukya, Aitareya, Taittiriya, Brhadaranyaka, Chandogya and Svetasvatara. To this list is usually added the Kausitaki and Maitrayaniya (or Maitri) to make the thirteen Principal Upanishads, a canon which has found favour with most scholars of the present day."
  4. Hume, Robert Ernest (১৯২১), The Thirteen Principal Upanishads, Oxford University Press 
  5. Edward Fitzpatrick Crangle (১৯৯৪)। The Origin and Development of Early Indian Contemplative Practices। Otto Harrassowitz Verlag। পৃষ্ঠা 8, 12। আইএসবিএন 978-3-447-03479-1 
  6. Madabhushini Narasimhacharya (২০০৪)। Sri Ramanuja। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 32। আইএসবিএন 9788126018338As for Ramanuja, his commentary on the Gita and the Brahmasutra are quite well known as conforming to this practice . But he did not write any regular commentary on the Upanishads as other philosophers like, say, Sankara and Anandatirtha (Madhva) did. 
  7. Stephen Phillips (২৬ জুন ২০০৯)। Yoga, Karma, and Rebirth: A Brief History and Philosophy। Columbia University Press। পৃষ্ঠা 309। আইএসবিএন 9780231144858 
  8. Kim Knott (২০১৬)। Hinduism: A Very Short Introduction। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 12–13। আইএসবিএন 978-0-19-874554-9 
  9. Stephen Phillips (2009), Yoga, Karma, and Rebirth: A Brief History and Philosophy, Columbia University Press; আইএসবিএন ৯৭৮-০২৩১১৪৪৮৫৮, Chapter 1
  10. Richard King (1995). Early Advaita Vedānta and Buddhism: the Mahāyāna context of the Gauḍapādīya-kārikā. SUNY Press. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৯১৪-২৫১৩-৮, page 52
  11. Nakamura 2004, পৃ. 286।
  12. WK Mahony (1987), Upanishads, in Jones, Lindsay, MacMillan Encyclopedia of Religion (2005), MacMillan, আইএসবিএন ৯৭৮-০০২৮৬৫৯৯৭৮, page 9483
  13. Sharma, C. (1997). A Critical Survey of Indian Philosophy, Delhi: Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৮১-২০৮-০৩৬৫-৫, p. 239
  14. Angot, Michel. (2007) Taittiriya-Upanisad avec le commentaire de Samkara, p.7. College de France, Paris. আইএসবিএন ২-৮৬৮০৩-০৭৪-২
  15. Patrick Olivelle (১৯৯৮)। The Early Upanishads: Annotated Text and Translation। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 12–13। আইএসবিএন 978-0-19-512435-4 
  16. Stephen Phillips (২০০৯)। Yoga, Karma, and Rebirth: A Brief History and Philosophy। Columbia University Press। পৃষ্ঠা 28–30। আইএসবিএন 978-0-231-14485-8 
  17. Patrick Olivelle (2014), The Early Upanishads, Oxford University Press; আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৫১২৪৩৫৪, pp. 12-13
  18. Jonardon Ganeri (২০০৭)। The Concealed Art of the Soul: Theories of Self and Practices of Truth in Indian Ethics and Epistemology। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 13–14। আইএসবিএন 978-0-19-920241-6 
  19. Patrick Olivelle (১৯৯৮)। Upaniṣads। Oxford University Press। পৃষ্ঠা xxxvi–xxxvii। আইএসবিএন 978-0-19-283576-5 
  20. Eugene F. Gorski (২০০৮)। Theology of Religions: A Sourcebook for Interreligious Study। Paulist। পৃষ্ঠা 103 note 15। আইএসবিএন 978-0-8091-4533-1 , Quote: "It is therefore one of the oldest texts of the Upanishad corpus, possibly dating to as early as the ninth century BCE".

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]