প্রাইজেল
প্রাইজেল হল ইরানের একটি কর্দম আগ্নেয়গিরি। এটি খাশ শহরের নিকট[২] সিস্তন ও বালুচেস্তন প্রদেশে অবস্থিত।[৩] কর্দম আগ্নেয়গিরিটিতে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়।[১]
কর্দম আগ্নেয়গিরি হল এমন ধরনের ভূমিরূপ যেখানে মাটির তল থেকে জল এবং গ্যাস উদ্গৃত হয়। দক্ষিণ-পূর্ব ইরানে দুটি স্থানে এই ঘটনা ঘটেছিল। যার একটি বাজমান এবং তাফতান আগ্নেয়গিরির নিকটস্থ, যেটি উত্তপ্ত (৭০–৯০ °সে (১৫৮–১৯৪ °ফা)), অন্যটি ঠান্ডা এবং তা থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ও টেকটোনিক-পাললিক প্রক্রিয়ার উদগিরণ ঘটে থাকে।[৪] ঠাণ্ডা কর্দম আগ্নেয়গিরি ব্যাখ্যা করার জন্য বেশকিছু তত্ত্ব প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি দাবি করে যে কাদামাটিতে জল আটকে থাকে এবং এইভাবে চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে কাদামাটি তরল হয়ে যায় এবং ভূ-চ্যুতির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে উদ্গিরিত হয়। উল্লিখিত দুটি আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি অবস্থান সত্ত্বেও, প্রাইজেলকে একটি ঠান্ডা কর্দম আগ্নেয়গিরি হিসাবে বিবেচনা করা হয়,[১] যার তাপমাত্রা ২০.৫–৩০ °সে (৬৮.৯–৮৬.০ °ফা)।[৫]
প্রাইজেল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৬৬৭ মিটার (৫,৪৬৯ ফু) এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২৭ মিটার (৪১৭ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত।[৬] এই উচ্চতা এটিকে অপেক্ষাকৃত উঁচু মাটির আগ্নেয়গিরিতে পরিণত করে, যা ইরানের সবচেয়ে বড় কর্দম আগ্নেয়গিরি হিসাবে বিবেচিত।[৭][৬] এটির প্রস্থ ১,৪০০ মিটার (৪,৬০০ ফু)। কোণ, গ্রাইফোন এবং জলাশয়ের মাধ্যমে উদগীরণ ঘটে।[৮] এখানে এগারোটি স্বতন্ত্র গর্ত রয়েছে, যার মধ্যে সাতটি সক্রিয়, কিন্তু সেগুলি সবই অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের। কর্দম আগ্নেয়গিরিটি একটি মার্ল পাহাড়ি ৫০ হেক্টর (১২০ একর) এলাকা জুড়ে রয়েছে, এটি তুলনামূলকভাবে বড় আকারেরও। প্রবাহিত জলের ক্ষয়ীভবন কর্দম আগ্নেয়গিরির পাশাপাশি তার আশেপাশের স্থানকেও প্রভাবিত করেছে, সম্ভবত গুহাগুলির ধস থেকে গিরি এবং গিরিখাত তৈরি করেছে।[৯] ক্ষয়প্রাপ্ত এবং নিষ্ক্রিয় আগ্নেয়গিরির ভেন্ট থেকে এ ধারণা পাওয়া যায়।[১০]
২০০৩ সালের মে মাসে আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় বলে প্রতিবেদন করা হয়েছিল। প্রতি ১৫-৬০০ সেকেন্ডে বুদবুদগুলির বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই ঠান্ডা ঘোলা জলের উদগিরণ ঘটে।[৯] এই কাদা তুলনামূলকভাবে তরল এবং মোটামুটি লবণাক্ত।[১১] প্রাইজেল থেকে উদ্গৃত গ্যাস মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড। এই অঞ্চলের মিথেন নির্গতকারি অন্যান্য কর্দম আগ্নেয়গিরি থেকে ভিন্ন।[৯] স্থানীয় মানুষদের দ্বারা কর্দম আগ্নেয়গিরি একটি পবিত্র স্থান হিসাবেও বিবেচিত হয়, যেখানে একজন পবিত্র ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করেন।[১২]
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ৪।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ৩।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. 1।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ১।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ৫।
- ↑ ক খ ইয়াজদি ২০১৩, পৃ. ৩৫৪।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ১-৮।
- ↑ ফরহাদিয়ান বাবাদি ২০১৯, পৃ. ১৯২।
- ↑ ক খ গ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. 4।
- ↑ ফরহাদিয়ান বাবাদি এবং অন্যান্য ২০১৯, পৃ. ১৯২।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. 5।
- ↑ নেগারেশ ২০০৮, পৃ. ৩, ৪।
- সূত্র
- ইয়াজদি, আবদুল্লাহ (২০১৩)। "Potentials of Iran's Geotourism and Structure of Mud Volcanoes"। Journal of Basic and Applied Scientific Research (ইংরেজি ভাষায়)। TextRoad (৩): ৩৫০-৩৫৮। আইএসএসএন 2090-4304। ওসিএলসি 1256392129।
- নেগারেশ, হোসেন (২০০৮)। "Mud volcanoes in Sistan and Baluchestan Provinces, Makran Coast, Southeast Iran" (পিডিএফ)। Bulletin of the Geological Society of Malaysia। কুয়ালালামপুর: মালয় বিশ্ববিদ্যালয়। ৫৪: ১-৭। ডিওআই:10.7186/bgsm54200801 । ২৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০২২।
- ফরহাদিয়ান বাবাদি, মাহিন; মেহরাবি, বেহজাদ; তসি, ফ্রাঙ্কো; কাবাসি, জ্যাকোপো; ভাসেলি, অরল্যান্ডো; শাকেরী, আতা; পেচিওনি, এলেনা; ভেনটুরি, স্টেফানিয়া; জেলেনস্কি, মাইকেল; চ্যাপলিগিন, ইলিয়া (১ আগস্ট ২০১৯)। "Origin of fluids discharged from mud volcanoes in SE Iran"। Marine and Petroleum Geology (ইংরেজি ভাষায়)। ১০৬। আইএসএসএন 0264-8172। এসটুসিআইডি 164564073। ওসিএলসি 222766641। ডিওআই:10.1016/j.marpetgeo.2019.05.005।