গগনচন্দ্র অধিকারী
গগনচন্দ্র অধিকারী | |
---|---|
জন্ম | কাওয়াইমারী সাতরা, ছায়াগাঁও, কামরূপ জেলা | ১ জুন ১৯৪১
মৃত্যু | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ | (বয়স ৭৯)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
শিক্ষা | অর্থনীতিতে স্নাতক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর |
মাতৃশিক্ষায়তন | কটন কলেজ ভোলানাথ বড়ুয়া কলেজ |
পেশা | শিশু সাহিত্যিক, সরকারি কর্মকর্তা |
দাম্পত্য সঙ্গী | মীরা অধিকারী |
সন্তান | দেবজিৎ অধিকারী দেবিকা অধিকারী অভিজিৎ অধিকারী |
পিতা-মাতা | পূর্ণচন্দ্র অধিকারী (পিতা) উমাদিনী অধিকারী (মাতা) |
পুরস্কার | সাহিত্য আকাদেমি বাল সাহিত্য পুরস্কার, ২০১০ |
গগনচন্দ্র অধিকারী (অসমীয়া: গগনচন্দ্ৰ অধিকাৰী; ১ জুন ১৯৪১ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০) ছিলেন একজন ভারতীয় সাহিত্যিক। তিনি অসমীয়া ভাষার শিশু সাহিত্যিক হিসাবে বিখ্যাত।
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা
[সম্পাদনা]গগনচন্দ্র অধিকারী ১৯৪১ সালের ১ জুন ছায়াগাঁওয়ের কাওয়াইমারী সাতরায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম পূর্ণচন্দ্র অধিকারী এবং মাতার নাম উদামিনী অধিকারী। গগনচন্দ্র অধিকারী ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি ছায়াগাঁও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি হন। প্রধান পণ্ডিত প্রকাশচন্দ্র বড়ুয়া তাঁর মেধার প্রমাণ পেয়ে তাঁকে প্রথম শ্রেণির পরিবর্তে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেন। গগনচন্দ্র অধিকারী ১৯৫৭ সালে ছায়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ও পরে কটন কলেজে তার কলেজ জীবন শুরু করেন। আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ১৯৬২ খ্রিঃ বি. বড়ুয়া মহাবিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কর্মজীবনের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]গগনচন্দ্র অধিকারী জীবন বীমা কর্পোরেশনে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সহকারী নিয়োগ কর্মকর্তা হিসাবে আসাম সরকারের চাকরিতে যোগদান করেন। পরে তিনি ১৯৯৯ সালের ৩১ মে আসাম সরকারের কর্মসংস্থান বিভাগের যুগ্ম পরিচালক পদে অফিসার-ইন-চার্জ হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্য চর্চা
[সম্পাদনা]চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় 'সাদিনীয়া অসমীয়া' নামক সাপ্তাহিক পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা 'মিনতি' প্রকাশিত হয়। 'পখিলী বাইদেওকে চিঠি' তার দ্বিতীয় কবিতা। গৌরীকান্ত তালুকদার সম্পাদিত শিশু পত্রিকা 'দীপক' এবং 'অসম বাণী'-তে তিনি নিয়মিত লেখালেখি করতেন। বই আকারে প্রকাশিত তাঁর উল্লেখযোগ্য শিশুসাহিত্যের মধ্যে রয়েছে:
- টকাত একোটা হাতী (মে ১৯৮১)
- র'দালি এ, র'দ একন দে (অক্টোবর ১৯৮৮)
- কক্ ককরে-কক্ কেকে-হুয়া (জানুয়ারি ১৯৯০)
- তিনিখন ঠেং হ’ল বুঢ়ী আইতার (১৯৯৫)
- আখরর গীত (নভেম্বর ১৯৯৫)
- টর্চ মরা মহ (২৯ ডিসেম্বর ২০০১)
- মার গুলি, পকা চুলি ভিজা মেকুরীর অতপালি (ডিসেম্বর ২০১৭) ইত্যাদি
তিনি মনোরাম খবর পেরা (ডিসেম্বর ১৯৯৫) শিরোনামে শিশুদের প্রবন্ধের সংকলন এবং মাখন মামার সাধু (নভেম্বর ২০০২) নামে একটি বইও লিখেছেন। এছাড়া ২০০৩ সালে তিনি নবকান্ত বড়ুয়ার শিশুসাহিত্য সমগ্র (প্রথম খণ্ড) সম্পাদনা করেন।
জনকাজ
[সম্পাদনা]গগনচন্দ্র অধিকারী জনসাধারণ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত ছিলেন। তিনি অসম সাহিত্য সভার সহ-সাধারণ সম্পাদক (১৯৮৪-৮৬), গুয়াহাটি নাইট জুনিয়র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, 'উত্তরণ সাহিত্য আলোচনা চক্র'-এর সভাপতি, শিশু ও কিশোর ম্যাগাজিন 'মুকুতা'র (আসাম সরকার, অসম প্রকাশন পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত) উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন।[১] তিনি গুয়াহাটি সত্র মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ছায়াগাঁও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।
পুরস্কার সম্মাননা
[সম্পাদনা]- টকাত একোটা হাতী-এর জন্য ১৯���২-৮৩ সালে অসম সাহিত্য সভার প্রেমধর দত্ত সোনওয়ারানী শিশুসাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
- ১৯৯২ সালে 'র'দালি এ, র'দ একন দে' বইটি শিশুসাহিত্য হিসেবে জাতীয় বই ট্রাস্ট কর্তৃক পুরস্কৃত হয়।
- সাহিত্য আকাদেমি বাল সাহিত্য পুরস্কার, ২০১০
মৃত্যু
[সম্পাদনা]গগনচন্দ্র অধিকারী ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[২] মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক গগণ চন্দ্ৰ অধিকাৰীৰ ৮০ বছৰ বয়সত বিয়োগ"। প্রাগ নিউজ (অসমীয়া ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "টকাত একোটা হাতী! লিখিবলৈ আৰু নাই গগনচন্দ্ৰ অধিকাৰী…"। অসমীয়া প্রতিদিন (অসমীয়া ভাষায়)। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০। ২৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৪।