একশক্তিবাদ
টেমপ্লেট:ঐতিহাসিক খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব
এককশক্তিবাদ বা মনোএনার্জিজম (গ্রিক: μονοενεργητισμός) প্রাথমিক মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্বের একটি ধারণা। এই বিশ্বাস মতে, খ্রিস্টের শুধুমাত্র একটি "শক্তি" (এনার্জিয়া) ছিল। একটিমাত্র শক্তির শিক্ষাটি সপ্তম শতাব্দীর প্রথমার্ধে কনস্টান্টিনোপলের পাদ্রি সার্জিয়াস কর্তৃক প্রচার করা হয়, কিন্তু দ্বিশক্তিবাদের বিরোধিতা অব্যাহত থাকে, যতক্ষণ না ষষ্ঠ সার্বজনীন পরিষদে দ্বিশক্তিবাদীতাকে সনাতনী হিসাবে সমর্থন করা হয়। শেষ পর্যন্ত, এককশক্তিবাদকে ধর্মদ্রোহিতা হিসাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, দ্বিশক্তিবাদের পক্ষে রায় পড়ে।[১]
চ্যালসেডোনিয়ান বিভেদ সংশোধন করতে এবং একক খ্রিস্টতত্ত্ব দিয়ে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের মধ্যকার প্রধান খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলিকে একত্রিত করতে সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথম এবং কনস্টান্টিনোপলের দ্বিতীয় পরিষদের ব্যর্থতার পর, হিরাক্লিয়াস (৬১০-৬৪১) কর্তৃক অনুরূপ প্রচেষ্টার পুনর্নবীকরণ করা হয়, যিনি তাদেরকে এককশক্তিবাদের সাথে আপোসের পরামর্শ দিয়ে ইস্টার্ন অর্থোডক্স চ্যালসডোনিয়ান দল এবং এককপ্রকৃতিবাদী নন-চ্যালসেডোনিয়ান দলের মধ্যে বিভেদ সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। আপোসে, চ্যালসেডোনিয়ান দ্বৈতপ্রকৃতিবাদী বিশ্বাসকে গ্রহন করা হয়, কিন্তু একপ্রকৃতিবাদীদের ব্যবহৃত শব্দের অর্থ ইচ্ছাকৃতভাবেই অস্পষ্ট রেখে রদ করে দেওয়া হয়। চ্যালসেডোনিয়ান দ্বৈতপ্রকৃতিবাদের ভাষ্যমতে, ঈশ্বরের সাকার মূর্ত যীশু খ্রিস্ট হলেন দুই প্রকৃতির অধিকারী এবং তিনি ওই দুই প্রকৃতিতেই বিদ্যমান। কিন্তু একপ্রকৃতিবাদীদের কথা হলো, যীশুর একটি "শক্তি" (এনার্জিয়া) ছিল, এই শব্দটির সংজ্ঞা ইচ্ছাপূর্বক অস্পষ্ট রেখে দেওয়া হয়। একশক্তিবাদের ধারণাটি কনস্টান্টিনোপল, অ্যান্টিওক এবং আলেকজান্দ্রিয়ার পাদ্রিবর্গ এবং সেইসাথে আর্মেনিয়ানদের কাছে গৃহীত হয়। আর রোমের পোপ অনারিয়াস প্রথম কর্তৃক তার ৬৩৫ এপিসলে স্পষ্টভাবে সমালোচনাও করা হয় নাই। তবুও অ্যাথানাসিয়াস প্রথম গ্যামোলো একে প্রত্যাখ্যান করেন এবং জেরুজালেমের পাদ্রি সোফ্রোনিয়াসের শক্তিশালী বিরোধিতা ব্যাপক সমর্থন লাভ করে। এ বিরোধিতা হেরাক্লিয়াসকে ৬৩৮ সালে শিক্ষাটি পরিত্যাগ করতে (যদিও তখনও দ্বিশক্তিবাদের নিন্দা করতেন) এবং এর পরিবর্তে একেষণাবাদ মতবাদ প্রয়োগ করার চেষ্টা করতে পরিচালিত করে, বিশেষত কনফেসর ম্যাক্সিমাস যেহেতু বিরোধিতা করেছিলেন। এতেও বিভেদ নিরাময় এবং ধর্মতাত্ত্বিকভাবে সাম্রাজ্যকে একত্রিত করতে ব্যর্থ হয়।
৬৮০-৬৮১ সালে কনস্টান্টিনোপলে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ সার্বজনীন পরিষদে একশক্তিবাদ এবং একইসাথে একেষণাবাদ উভয়কেই ধর্মদ্রোহিতা হিসাবে দণ্ডাজ্ঞা দেওয়া হয়।[১]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Meyendorff 1989।
উৎস
[সম্পাদনা]- Sophronius of Jerusalem (২০০৯)। Pauline, Allen, সম্পাদক। Sophronius of Jerusalem and Seventh Century Heresy। Oxford Early Christian Texts। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-954693-0।
- Conterno, Maria (২০১৩)। "Three Unpublished Texts on Christ's Unique Will and Operation from the Syriac Florilegium in the ms. London, British Library, Add. 14535"। Millennium: Yearbook on the Culture and History of the First Millennium C.E.। 10: 115–144।
- Hovorun, Cyril (২০০৮)। Will, Action and Freedom: Christological Controversies in the Seventh Century। Leiden-Boston: Brill। আইএসবিএন 978-90-04-16666-0।
- Meyendorff, John (১৯৮৩)। Byzantine Theology: Historical Trends and Doctrinal Themes (Revised 2 সংস্করণ)। New York: Fordham University Press। আইএসবিএন 978-0-8232-0967-5।
- Meyendorff, John (১৯৮৯)। Imperial unity and Christian divisions: The Church 450-680 A.D.। Crestwood, NY: St. Vladimir's Seminary Press। আইএসবিএন 978-0-88141-056-3।
- Ostrogorsky, George (১৯৫৬)। History of the Byzantine State। Oxford: Basil Blackwell।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Chapman, John (১৯১১)। "Monothelitism and Monothelites"। Herbermann, Charles G.; Pace, Edward A.; Pallen, Condé B.; Shahan, Thomas J.; Wynne, John J.। Catholic Encyclopedia। 10। New York: The Encyclopedia Press (প্রকাশিত হয় ১৯১৩)। পৃষ্ঠা 502–508।