ফ্রান্সিস বেকন

ইংরেজ দার্শনিক

স্যার ফ্রান���সিস বেকন (ইংরেজি Francis Bacon ফ্র্যান্সিস্‌ বেক‌ন্‌, ২২শে জানুয়ারি, ১৫৬১ - ৯ই এপ্রিল, ১৬২৬) একাধারে একজন ইংরেজ দার্শনিক, আইনজ্ঞ, কূটনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার পথপ্রদর্শক। আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও তিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের প্রবক্তা এবং জ্ঞানান্ধতা ও গোঁড়ামি বিরোধী হিসেবে সুখ্যাত হন।

ফ্রান্সিস বেকন
ফ্রান্স পোর্বাসের আঁকা ফ্রান্সিস বেকনের প্রতিকৃতি
জন্ম২২ জানুয়ারি ১৫৬১
স্ট্রান্ড, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৯ এপ্রিল ১৬২৬ (৬৫ বছর)
হাইগেট, মিডিলসেক্স, ইংল্যান্ড
জাতীয়তাইংরেজ
মাতৃশিক্ষায়তনকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
যুগইংলিশ রেঁনেসা, বৈজ্ঞানিক বিপ্লব
অঞ্চলপাশ্চাত্য দর্শন
ধারারেঁনেসা দর্শন
স্বাক্ষর

ফ্রান্সিস বেকনকে অভিজ্ঞতাবাদের জনক বলা হয়। তিনি দর্শনিক চিন্তাধারার কিছু মৌলিক তত্ব প্রবর্তন করেন যেগুলোকে বেকনিয়ান মেথডও বলা হয়ে থাকে। কোন জিনিসের উৎস অনুসন্ধানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াগুলো তিনিই প্রবর্তন করেন। এইসব প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া বলা হয়।

ফ্রান্সিস বেকন ১৬০৩ সালে নাইটহুড পান। এছাড়াও ১৬১৮ এবং ১৬২১ সালে ব্যারন ভিরলাম এবং ভিসকাউন্ট সেন্ট এলবান উপাধি পান। যেহেতু মৃত্যুর সময় তার কোন উত্তরসূরী ছিল না, তাই পরবর্তীকালে তার উপাধিগুলো বিলীন হয়ে যায়।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

সম্পাদনা

ফ্রান্সিস বেকন ২২ জানুয়ারি ১৫৬১ সালে লন্ডনের স্ট্রান্ডের নিকট অবস্থিত ইয়র্ক হাউজে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্যার নিকোলাস বেকনের দ্বিতীয় স্ত্রী, অ্যান (কুক) বেকনের পুত্র ছিলেন। তাদের কন্যা এন্থোনি কুক একজন খ্যাতনামা মানবতাবাদী ছিলেন। তার মার বোন, উইলিয়াম চেসিল প্রথম বেরন বার্গলেইকে বিয়ে করেন।

জীবনীকারগণ মনে করেন, বেকন ঘরে থেকেই পড়াশোনা করেন। কারণ তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন এবং ধারণা ছিলো সারা জীবন ধরে তাকে তা ভুগতে হতে পারে। তিনি অক্সফোর্ড থেকে গ্রাজুয়েটেড জন ওয়ালসাল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে ৫ এপ্রিল, ১৫৭৩ সালে যখন যখন তার বয়স বারো বছর, তিনি ক্যামব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে প্রবেশ করেন।

সেখানে তার বড় ভাই এন্থোনি বেকনের সাথে তিন বছর ডক্টর জন হুইটগিফটের অভিভাবকত্বে শিক্ষা গ্রহণ করেন। বেকনের শিক্ষা ল্যাটিন এবং মধ্যযুগীয় পন্থায় ছিল। তিনি পটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়তেও পড়াশোনা করেন। ক্যাম্ব্রিজে থাকাকালীন সময়ে প্রথম রানী এলিজাবেথের সাথে তার দেখা হয়। রানী এলিজাবেথ তার অকালপক্ক পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হন এবং তাকে "দ্যা ইয়ং লর্ড কিপার" নামে সম্বোধিত করেন।

শিক্ষা গ্রহণ চলাকালীন তৎকালীন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা পদ্ধতি এবং ভুল প্রয়োগ সম্মন্ধে তার উপলব্ধি ঘটেছিল। এরিস্টলীয় দর্শন তত্বের সাথেও তিনি একমত ছিলেন না, সেইজন্য তাকে বিতর্কিত হতে হয়।

তিনি এবং এন্থ��নি ২৭ জুন, ১৫৭৬ সালে গ্রেইস ইন এর দ্যা সোসাইটি ম্যাজিস্টার এ প্রবেশ করেন। তার কয়েকমাস পর, স্যার এমিয়াস পলেটের সাথে বিদেশ যান। তৃতীয় হেনরির অধীনে ফ্রান্সের সরকার এবং সমাজ তাকে রাজনীতি বিষয়ক জ্ঞান প্রদান করে। তার ঠিক পরের তিন বছর, তিনি ব্লোইস, পটিয়া, ফ্রান্সের ট্যুরস, ইতালি এবং স্পেন ভ্রমণ করেন। এই ভ্রমণের সময় তিনি যখন কূটনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেন এবং ভাষা, রাজনীতি, সিভিল ল, বিষয়ে পড়াশুনা করেন। অন্তত কোন একটা উপলক্ষে, ইংল্যান্ডের বার্গলেই, লেস্টার সহ রানীর সাথে তার কূটনৈতিক বার্তালাপ হতো।

১৫৭৯ সালে তার বাবার হঠাৎ মৃত্যুতে বেকন ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। স্যার নিকোলাসের ছোট ছেলের জন্য কিছু জমি কিনতে টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর আগে সম্পত্তির মাত্র পাঁচভাগ ফ্রান্সিসের নামে রেখে যান। বেকন অনেক টাকা ধার করায় ঋণী হয়ে পড়েছিলেন। নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য ১৫৭৯ সালে গ্রেইস ইন এ বাড়ি কিনেন। তার মা, মার্ক্স এর জমিদার লেডি অ্যান এর কাছ থেকে খরচপাতি পেতেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা