ল্যেভ তল্স্তোয়
লিও তলস্তোয় | |
---|---|
স্থানীয় নাম | Лёв Николаевич Толстой |
জন্ম | লিয়েফ়্ নিকলায়েভ়িচ্ তল্স্তোয় ২৮ আগস্ট ১৮২৮ ইয়াস্নায়া পলিয়ানা, টুলা প্রদেশ (বর্তমান টুলা ওব্লাস্ট), রুশ সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ২০ নভেম্বর ১৯১০ আস্তাপভা, রিয়াজান প্রদেশ (বর্তমান লিপেটস্ক ওব্লাস্ট), রুশ সাম্রাজ্য | (বয়স ৮২)
সমাধিস্থল | ইয়াস্নায়া পলিয়ানা |
পেশা | ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক |
ভাষা | রুশ |
জাতীয়তা | রুশ |
সময়কাল | ১৮৪৭–১৯১০ |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | যুদ্ধ ও শান্তি আন্না কারেনিনা ইভান ইলিচের মৃত্যু স্বর্গরাজ্য তোমার মধ্যেই আছে পুনরুত্থান |
দাম্পত্যসঙ্গী | সোফিয়া বের্স্ (বি. ১৮৬২) |
সন্তান | ১৪ |
স্বাক্ষর | |
লিও তলস্তোয় (রুশ: Лёв Николаевич Толстой; ; লিয়েফ়্ নিকলায়েভ়িচ্ তল্স্তোয়; ২৮ আগস্ট ১৮২৮ – ২০ নভেম্বর ১৯১০) খ্যাতিমান রুশ লেখক ছিলেন। তাকে রুশ সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক, এমনকি বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।[২] তার দু’টি অনবদ্য উপন্যাস হচ্ছে - যুদ্ধ ও শান্তি (রচনাকাল ১৮৬৩–১৮৬৯) এবং আন্না কারেনিনা (রচনাকাল ১৮৭৩–১৮৭৭)।[৩] তিনি ১৯০২ থেকে ১৯০৬ পর্যন্ত প্রতি বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য একাধিকবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন; ১৯০১, ১৯০২ এবং ১৯১০ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন এবং তার পুরস্কার না পাবার বিষয়টি নোবেল পুরস্কার বিতর্কের একটি প্রধান কারণ ছিল।[৪][৫][৬][৭]
তলস্তোয়ের জন্ম রুশ সাম্রাজের তুলা প্রদেশের ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নামক স্থানে। তিনি ছিলেন পরিবারের চতুর্থ সন্তান। শিশু বয়সে তার বাবা-মা মারা যান এবং আত্মীয়-স্বজনরাই তাকে বড় করেন। তিনি উপন্যাস ছাড়াও নাটক, ছোটগল্প এবং প্রবন্ধ রচনায় ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯১০ সালের ২০ নভেম্বর রাশিয়ার আস্তাপভা নামক এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের রেলওয়ে স্টেশনে তলস্তোয় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর পর তার ইচ্ছানুসারে ১৯২৮ ও ১৯৫৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তার সাহিত্যকর্ম ৯০ খণ্ডে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রকাশিত হয়, যার অর্ধেকাংশ তার দিনলিপি ও চিঠিপত্র।[৮]
বংশ
[সম্পাদনা]তল্স্তোয় রাশিয়ান প্রাচীন সুপরিচিত অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিয়োত্র্ টলস্টয়ের বর্ণিত ইন্দ্রিস নামে একটি পৌরাণিক অভিজাত পুরুষের সাথে তাঁদের বংশের যোগসূত্র ছিল, পিয়োত্র্রের বর্ণনায় ১৩৫৩ সালে "নেমেক থেকে, সিজারের ভূমি থেকে" যিনি দুই পুত্র লিটভিনোস (অথবা লিটভোনিস) এবং জিমোনটেন (বা জিগমন্ট) এবং ৩০০০ জনের অনুচরবৃন্দ নিয়ে চের্নিগভে পৌঁছেছিলেন।[৯][১০] যদিও "নিমেক" (Nemec) শব্দটি কেবল জার্মানদের বোঝাবার জন্য ব্যবহৃত হত। সেই সময় এটি রাশিয়ান ভাষায় কথা বলেন না এমন যে কোনও বিদেশীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছিল (নেময়ের শব্দের অর্থ নিঃশব্দ বা নির্বাক)।[৯][১০][১১] চেরেনিগোভ তৎকালীন ব্রায়ানস্কের প্রথম দিমিত্রি (Demetrius I Starshy) দ্বারা শাসিত হয়েছিল দর্শন ছিলো পৌত্তলিকতাবাদ। কিছু গবেষণা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে তল্স্তোয় পরিবার লিথুয়ানিয়া থেকে আগত; যারা লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচি (Grand Duchy of Lithuania) অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলে ছিলো।[১২][১৩]
শিক্ষা জীবন
[সম্পাদনা]নিজের চেষ্টায় আরও অনেক ভাষা শিখেছিলেন। তিনি লাতিন, ইংরেজি, আরবি, তুর্কো-তাতার, ইতালীয়, গ্রিক এবং হিব্রু ভাষা জানতেন। তিনি সংগীতশাস্ত্র এবং চিত্রাঙ্কন বিদ্যাতেও মোটামুটি পারদর্শী ছিলেন। তার একাগ্রতা ও পরিশ্রম করবার শক্তি ছিল অসাধারণ। তিনি মেধাবীও ছিলেন। বস্তুত তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত।
ব্যক্তিজীবন
[সম্পাদনা]তার জীবনীশক্তি ও কর্মোদ্যম ছিল প্রচন্ড দানবীয় রকমের । ভালো শিকারি ছিলেন এবং ভয়ংকর একগুয়ে স্বভাবের ছিলেন। একবার ভালুক শিকারে গিয়েছিলেন, একটা ভালুক থাবা মেরে চোখের নিচে থেকে বাঁদিকের গাল ছিড়ে নামিয়ে দেয়; দুই সপ্তাহ পরে ভালো হয়ে তিনি ফের শিকারে যান এবং ঐ ভালুকটিকে বধ করেন। বন্ধু-বান্ধব বা সমাজ কী বলবে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজে যা উচিত এবং ন্যায্য বলে ভেবেছেন তাই করেছেন সবসময়। শান্ত-সুবোধ প্রকৃতির ছিলেন না, যৌবনে প্রচুর ধার-দেনা করেছেন এবং বিষয় সম্পত্তি নষ্ট করেছেন।পাদ্রী-পুরুতদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের সমালোচনা করেছেন, এবং তার শাস্তি স্বরূপ যাজক সম্প্রদায় ঘোষণা করেছেন যে, তলোস্তয় কে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে বহিষ্কার করা হল, তিনি আর খ্রিস্টান বলে গণ্য হবেন না। এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে যারা ঈশ্বর ও যীশুকে নিয়ে ব্যবসা করে তাদের চেয়ে তিনি সহস্র গুণ বেশি ধার্মিক খ্রিস্টান। তিনি যখন মারা যান তখন পাদ্রী-পুরুতদের দল ভিড় করে এসেছিলেন, কিন্তু কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয় নি; এবং দেশের ও বিদেশের হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াই তার শবযাত্রায় শামিল হয়ে তাকে সমাহিত করে। অন্যদিকে, সম্রাটের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই মুখর ছিলেন, স্বনামে ও বেনামে দেশের ভিতরে ও বাইরে জার-শাসনের সমালোচনা করে লেখা ছাপিয়েছেন; কিন্তু শাসক গোষ্ঠী ভয়ে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি, পাছে তাদের যদি আরও দুর্নাম এবং কেলেংকারীর বোঝা বইতে হয়। নিজের জমিদারিতে দরিদ্র চাষাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য স্কুল খুলেছিলেন, তাতে নিজে পড়িয়েছিলেন। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে আক্রান্ত অঞ্চল সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখে বেড়িয়েছিলেন। সরকারের বিরুদ্ধে ঔদাসীন্যের অভিযোগ এনেছেন, আদমশুমারীতে অংশ নিয়েছেন। আইনের নামে বিচারের প্রহসন কীভাবে হয় তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য দিনের পর দিন আদালত আর জেলখানায় ঘুরেছেন। এমন সততা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ বিস্ময়কর। তার মনের গড়ন ছিলো ভাবুকের, দার্শনিকের। সে জন্যই তিনি যখন গল্প-উপন্যাস-নাটক ইত্যাদি সৃজনশীল সাহিত্য রচনা করতে শুরু করলেন, সেখানে কোথাও অবাস্তব রোমান্টিক কল্পনা আমরা দেখতে পাই না। তিনি সেসব মানুষ, সামাজিক স্তর বা জীবনযাত্রার ছবিই তার কাহিনী তে এঁকেছেন যা তিনি নিজে দেখেছেন। তার অভিজ্ঞতার পরিধিও ছিলো বিশাল-সমাজের সবচেয়ে নিচু তলার মানুষ থেকে শুরু করে রাজদরবারের লোকজনের সাথে তিনি মিশতে পারতেন। তিনি দীর্ঘজীবন লাভ করেছিলেন এবং নানা কারণে তার শিল্পী জীবনের সবটুকুই অশান্তির মধ্��ে কেটেছে। এ�� অশান্তির একটি প্রধান কারণ ছিলো- সমাজে বা সভ্যতায় প্রচলিত কোন বিশ্বাস বা রীতিনীতি তিনি বিনা প্রশ্নে মেনে নেননি।
সাহিত্যকর্ম
[সম্পাদনা]তল্স্তোয়কে রাশিয়ান সাহিত্যের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হয়। নিজের রচনায় তলস্তয় দেখিয়েছেন প্রাক-বৈপ্লবিক রাশিয়ার জীবন, ফুটিয়ে তুলেছেন সেই সময়ের পরস্পরবিরোধী পরিস্থিতি যাতে গড়ে উঠত রুশ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও স্তরের মানসতা।[১৪] তাঁর রচনাগুলিতর মধ্যে যুদ্ধ ও শান্তি এবং আন্না কারেনিনা উল্লেখযোগ্য। তার কল্পকাহিনী লেখা বাস্তব জীবনকে নিয়ে লেখা।[১৫] যুদ্ধ ও শান্তি বইটি ১৮৬৫ থেকে ১৮৬৭ সালে ধারাবাহিকভাবে ও ১৮৬৯ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু হচ্ছে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট-এর রুশ অভিযান। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং শান্তির জন্য মানুষের সংগ্রামই এই উপন্যাসের মূল বক্তব্য।[১৬][১৭][১৮] আন্না কারেনিনা ১৮৭৮ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয। উপন্যাসটিতে তৎকালিন সময়ের বাস্তবিকতা এবং পারিবারিক জীবনের ব্যক্তিগত অবস্থার প্রকাশ পেয়েছে। তার রচনার পরিমাণ বিশাল: ছোটগল্প, বড়গল্প, উপন্যাস, নাটক, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ, ডায়েরি, চিঠিপত্র সব মিলিয়ে তার রচনা সমগ্র প্রায় ৯০ খণ্ডে বিভক্ত।
গ্রন্থতালিকা
[সম্পাদনা]উপন্যাস
[সম্পাদনা]- শৈশব (১৮৫২)
- কৈশোর (১৮৫৪)
- যৌবন (১৮৫৭)
- কসাক (১৮৬৩)
- যুদ্ধ ও শান্তি (১৮৬৯)
- আন্না কারেনিনা (১৮৭৮)
- পুনরুত্থান (১৮৯৯)
বড় গল্প
[সম্পাদনা]- সুখের সংসার (১৮৫৯)
- ইভান ইলিচের মৃত্যু (১৮৮৬)
- ক্রয়েটজার সোনাটা (১৮৯১)
- শয়তান (১৮৯৯)
- জাল কুপন (১৯১১)
- হাজী মুরাদ (১৯১২)
ছোটগল্প
[সম্পাদনা]- গতকালের গল্প (১৯২৮)
- আক্রমণ (১৮৫৩)
- পবিত্র রাত্রি (১৮৫৩)
- বিলিয়ার্ড মার্কারের স্মৃতিচারণ (১৮৫৫)
- সেভাস্তোপল্ ডিসেম্বর ১৮৫৪ (১৮৫৫)
- সেভাস্তোপল্ মে ১৮৫৫ (১৮৫৫)
- বনানী ধ্বংস (১৮৫৫)
- সেভাস্তোপল্ আগস্ট ১৮৫৫ (১৮৫৬)
- দুই হুসার (১৮৫৬)
- ল্যুৎসের্ন্ (১৮৫৭)
- তিনটি মৃত্য (১৮৫৯)
- আলবের্ৎ (১৮৫৮)
- পলিকুশ্কা (১৮৬৩)
- তিখোন্ ও মালানিয়া (১৯১১)
- ১৮০৫ সাল (১৮৬৫)
- অ আ ক খ (১৮৭২)
- ঈশ্বর সত্যদ্রষ্টা (১৮৭২)
- লোকে কী নিয়ে বাঁচে (১৮৮১)
- ইলিয়াস (১৮৮৫)
- যেখানেই প্রেম সেখানেই ঈশ্বর (১৮৮৫)
- বোকা ইভানের গল্প (১৮৮৫)
- দুই বুড়ো (১৮৮৫)
- তিন মুনি (১৮৮৬)
- পক্ষিরাজ (১৮৮৬)
- কতটুকু জমি দরকার (১৮৮৬)
- মনিব ও ভৃত্য (১৮৯৫)
- ফাদার সিয়ের্গি (১৯১২)
- নরকধ্বংস ও তার পুননির্মাণ (১৯০২)
- বল-নাচের পর (১৯১১)
- ঐশী ও মানবিক (১৯০৬)
- কর্নিয়েই ভাসিলিয়েফ্ (১৯০৫)
- প্রার্থনা (১৯০৫)
- আলিওশা গর্শোক্ (১৯০৫)
- কিসের জন্য? (১৯০৬)
- কেউ দোষী নয় পৃথিবীতে (১৯১১)
- খোদিন্কা (১৯১০)
নাটক
[সম্পাদনা]- দূষিত পরিবার (১৮৬৪)
- অন্ধকারের ক্ষমতা (১৮৮৬)
- শিক্ষার পরিণাম (১৮৯১)
- জিন্দা লাশ (১৯১১)
- আঁধারে আলো (১৯১১)
প্রবন্ধ
[সম্পাদনা]- পাঠশালার প’ড়ো ও শিল্পকলা (১৮৬১)
- গণশিক্ষা বিষয়ে (১৮৭৪)
- স্বীকারোক্তি (১৮৮৪)
- আমি কী বিশ্বাস করি (১৮৮৪)
- মৌলবাদী ধর্মভাবনা সম্পর্কে অনুসন্ধান (১৮৮০)
- কী করতে হবে (১৮৮৬)
- শিল্পের সত্য (১৮৮৭)
- জীবন সম্পর্কে (১৮৮৮)
- ক্ষুধার্তকে অন্ন দিন (১৮৯১)
- খ্রিষ্টধর্ম ও দেশপ্রেম (১৮৯৩)
- শিল্পকলা সম্পর্কে (১৮৯৭)
- লজ্জা (১৮৯৫)
- ১৮৯৫ সালে রাশিয়াতে খ্রিষ্টান নিপীড়ন (১৮৯৫)
- শিল্প কী (১৮৯৮)
- বুভুক্ষা নাকি অন্য কিছু (১৮৯৮)
- সমকালীন দায়িত্ব (১৯০০)
- ধর্ম সম্পর্কে সহনশীলতা (১৯০২)
- পাদ্রিদের উদ্দেশ্যে (১৯০২)
- ধর্ম বিষয়ে (১৯০৩)
- শেক্সপিয়র ও নাট্য বিষয়ে (১৯০৬)
- পুনরায় ভেবে দেখুন (১৯০৪)
- রাশিয়ার সামাজিক আন্দোলন (১৯০৫)
- শতাব্দীর শেষ (১৯০৫)
- সবুজ ছড়ি (১৯০৫)
- রুশ বিপ্লবের তাৎপর্য (১৯০৬)
- কাউকে খুন করবে না (১৯০৭)
- নীরব থাকতে পারি না (১৯০৮)
- হিংসার অনুশাসন ও প্রেমের অনুশাসন (১৯০৯)
- পথচারীর সঙ্গে আলাপ (১৯০৯)
- গ্রামাঞ্চলে সংগীত (১৯০৯)
- আসল উপায় (১৯১০)
শেষজীবন ও মৃত্যু
[সম্পাদনা]তলস্তয় শেষ বয়সে প্রায় সন্তের জীবন যাপন করতে চেয়েছিলেন। নিজের কাজ তিনি নিজে হাতে করতেন, এমনকি নিজে জুতো তৈরি করে পরতেন, চাষাভুষোর মতো সাধারণ ও অল্প আহার করতেন, পরতেন খেতমজুরের পোশাক। শেষ বয়সে তিনি কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পথিমধ্যে ঠাণ্ডা লেগে তার নিউমোনিয়া হয়।[১৯] এতেই তিনি বাড়ি থেকে দূরে এক রেলস্টেশনে ২০শে নভেম্বর ১৯১০ সালে মারা যান।[২০] মৃতুর সময় তার বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর। পরে তার মরদেহ গ্রামে নিয়ে সমাহিত করা হয়।
তল্স্তোয়ের মৃত্যুর ঠিক আগের দিনগুলোতে স্বাস্থ্যের বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন ছিলো। তার সক্রিয়ভাবে প্রতিদিন তার যত্নে নিযুক্ত ছিলেন। মৃতুর শেষ কয়েকদিন তিনি যা বলেছেন তাই লেখা হয়েছিলো। তিনি তার অভিজাত জীবনধারাকে ত্যাগ করে সাধারন জীবন-যাপন করতে চেয়েছিলেন। তাই স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বাদ দিয়ে শীতের রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং অসুস্থ হয়ে মারা যান।[২১]
পুলিশ তার শেষকৃত্যেয় শোকযাত্রা সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু বাধা না মেনে হাজার হাজার কৃষক রাস্তায় নেমেছিলো। সেই সময় কোনো কোনো লোকের মুখে এমন কথা বলতে শোনা গিয়েছিল, "আভিজাত্য মারা গিয়েছিলেন" ;তারা টলস্টয়ের সম্পর্কে অন্য কিছু জানতেন।[২২] কিছু সূত্রের মতে, টলস্টয় জীবনের শেষ ঘণ্টাগুলো ট্রেনে তাঁর সহযাত্রীদের কাছে প্রেম অহিংস, এবং জর্জিবাদ প্রচার করে কাটিয়েছিলেন।[২৩]
চলচ্চিত্র
[সম্পাদনা]২০০৯ সালে তল্স্তোয়ের জীবনের শেষ বছরের দিনগুলো নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়The Last Station এই চলচ্চিত্র Jay Parini উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি করা হয়।[২৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Tolstoy in Color," Tolstoy Studies Journal, a publication of the Tolstoy Society of North America, n.d. Retrieved 27 June 2018.
- ↑ "Leo Tolstoy"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ↑ Beard, Mary (৫ নভেম্বর ২০১৩)। "Facing death with Tolstoy"। The New Yorker।
- ↑ "Nomination Database"। old.nobelprize.org। ২০১৯-১০-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮।
- ↑ "Proclamation sent to Leo Tolstoy after the 1901 year's presentation of Nobel Prizes"। NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮।
- ↑ Hedin, Naboth (১৯৫০-১০-০১)। "Winning the Nobel Prize"। The Atlantic (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮।
- ↑ "Nobel Prize Snubs In Literature: 9 Famous Writers Who Should Have Won (Photos)"। Huffington Post (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-১০-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮।
- ↑ https://www.rbth.com/literature/2013/09/09/90_volumes_of_tolstoy_in_a_single_click_29651.html
- ↑ ক খ Vitold Rummel, Vladimir Golubtsov (1886). Genealogical Collection of Russian Noble Families in 2 Volumes. Volume 2 // The Tolstoys, Counts and Noblemen. Saint Petersburg: A.S. Suvorin Publishing House, p. 487
- ↑ ক খ Ivan Bunin, The Liberation of Tolstoy: A Tale of Two Writers, p. 100
- ↑ Nemoy/Немой word meaning from the Dahl's Explanatory Dictionary (in Russian)
- ↑ Troyat, Henri (২০০১)। Tolstoy। আইএসবিএন 978-0-8021-3768-5।
- ↑ Robinson, Harlow (৬ নভেম্বর ১৯৮৩)। "Six Centuries of Tolstoys"। The New York Times।
- ↑ ভি. আই. লেনিন, অনুপ সাদি স্মপা. সাহিত্য প্রসঙ্গে টাঙ্গন, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০২০, পৃষ্ঠা ২৪
- ↑ Tolstoy: the making of a novelist. E Crankshaw – 1974 – Weidenfeld & Nicolson
- ↑ Moser, Charles. 1992. Encyclopedia of Russian Literature. Cambridge University Press, pp. 298–300.
- ↑ Thirlwell, Adam "A masterpiece in miniature." The Guardian (London, UK) October 8, 2005
- ↑ Briggs, Anthony. 2005. "Introduction" to War and Peace. Penguin Classics.
- ↑ Leo Tolstoy. EJ Simmons – 1946 – Little, Brown and Company
- ↑ Meek, James (২২ জুলাই ২০১০)। "James Meek reviews 'The Death of Tolstoy' by William Nickell, 'The Diaries of Sofia Tolstoy' translated by Cathy Porter, 'A Confession' by Leo Tolstoy, translated by Anthony Briggs and 'Anniversary Essays on Tolstoy' by Donna Tussing Orwin · LRB 22 July 2010"। London Review of Books। পৃষ্ঠা 3–8।
- ↑ The last days of Tolstoy. VG Chertkov. 1922. Heinemann
- ↑ Tolstaya, S.A. The Diaries of Sophia Tolstoy, Book Sales, 1987; Chertkov, V. "The Last Days of Leo Tolstoy," http://www.linguadex.com/tolstoy/index.html, translated by Benjamin Scher
- ↑ Kenneth C. Wenzer, "Tolstoy's Georgist spiritual political economy: anarchism and land reform – 1897–1910", Special Issue: Commemorating the 100th Anniversary of the Death of Henry George, The American Journal of Economics and Sociology, Oct 1997; http://www.ditext.com/wenzer/tolstoy.html
- ↑ Wallace, Irving, 'Everybody's Rover Boy', in The Sunday Gentleman. New York: Simon & Schuster, 1965. p. 117.