বাঙালি খ্রিস্টান
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
১৭,১৫,০০০ | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
বাংলাদেশ | ৯,৭৫,০০০[১] |
ভারত | ৭,৩০,০০০ (পশ্চিমবঙ্গ)[২] |
ভাষা | |
বাংলা, লাতিন (পবিত্র) | |
ধর্ম | |
খ্রিস্টান ধর্ম --- ক্যাথলিক ধর্ম --- প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ --- ভারতীয় রক্ষণশীল মতবাদ | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
বাঙালি মুসলমান, বাঙালি হিন্দু, বাঙালি বৌদ্ধ |
বাঙালি খ্রিস্টান হলেন বাঙালিদের মধ্যে যারা খ্রিস্টান ধর্মের অনুগামী। তাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলেন এবং তাঁরা মূলত বাংলাদেশ এবং ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় অধিবাসী। ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজ সমুদ্রযাত্রীদের আগমনের পরে বাংলায় খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তর শুরু হয়। উনিশ শতকের বাঙালি নবজাগরণের সময় বাঙালি অভিজাতদের মধ্যে অনেকেই খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তর হয়েছিল। এরপরে যা প্রজন্ম ধরে প্রজন্মান্তরে অব্যাহত রয়েছে।
বাঙালি খ্রিস্টানরা বাঙালি সংস্কৃতি, বাণিজ্য এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই অঞ্চলে মাদার টেরিজা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মিশনারি অফ চ্যারিটিসহ খ্রিস্টান মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আবাসস্থল।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]খ্রিস্টান ধর্ম ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজদের দ্বারা বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চট্টগ্রামের পর্তুগিজ উপনিবেশ বাংলায় প্রথম ভিকার অ্যাপোস্টলিকের আয়োজন করেছিল।[৩]জেসুইট মিশনারিরা ব্যান্ডেল এবং ঢাকায় গীর্জাও প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৬৮২ সালে বাংলায় প্রায় ১৪,১২০ রোমান ক্যাথলিক ছিল। ১৮০৯ সালে উইলিয়াম কেরি বাইবেল বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় অনেক উচ্চ-শ্রেণীর বাঙালি নবজাগরণের সময়ে মিশনারিদের প্রচারে আকৃষ্ট হয়ে খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল।
১৯৫০ সালে কলকাতায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী উসমানীয়-আলবেনীয় বংশোদ্ভূত সন্ন্যাসীনী মাদার টেরিজা মিশনারিস অফ চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থীদের সহায়তা ও আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল।
বর্তমান অবস্থা
[সম্পাদনা]বাঙালি খ্রিস্টান দক্ষিণ এশিয়ার একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসাবে স্বীকৃত। সাধারণত বাঙালি খ্রিস্ট সম্প্রদায় একটি উচ্চ সাক্ষরতার হার, কম পুরুষ-মহিলা লিঙ্গ অনুপাত এবং একটি ভালো সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা উপভোগ করেন।[৪]
খ্রিস্টান মিশনারিরা অনেক স্কুল, হাসপাতাল ও দরিদ্র ও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র ও বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা করেন। তাঁরা ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের নিকট থেকে সমর্থন প্রাপ্ত। বাংলা অঞ্চলে কলকাতা, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম নগরীতে উল্লেখযোগ্য খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী আছে।
গোষ্ঠী
[সম্পাদনা]রোমান ক্যাথলিক চার্চ
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ
[সম্পাদনা]বাংলাদেশে ক্যাথলিক চার্চ দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহীতে ক্যাথলিক বিশপের এলাকা সমেত ঢাকার ক্যাথলিক বিশপের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা। অন্যদিকে বরিশাল ও খুলনার ক্যাথলিক বিশপের এলাকা সমেত চট্টগ্রামের বিশপের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা।[৫]
- ঢাকা: ঢাকার রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- দিনাজপুর রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- ময়মনসিংহ রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- রাজশাহী রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- সিলেট রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগরের রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- বরিশাল রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- খুলনা রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
পশ্চিমবঙ্গ
[সম্পাদনা]পশ্চিমবঙ্গের রোমান ক্যাথলিক গির্জা কলকাতার রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকার মধ্যে হয়।
- কলকাতা: কলকাতা মহানগরের রোমান ক্যাথলিক ��িশপের এলাকা
- আসানসোলের রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- বাগডোগরা রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- বারুইপুর রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- দার্জিলিং রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- জলপাইগুড়ি রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- কৃষ্ণনগর রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
- রায়গঞ্জ রোমান ক্যাথলিক বিশপের এলাকা
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]লুসোফোন ঐতিহ্য
[সম্পাদনা]অনেক ক্যাথলিক বাঙালি খ্রিস্টান নামের ক্ষেত্রে পর্তুগিজ পদবি ব্যবহার করে থাকেন। বাঙালি মুসলমানরা যেমন আরবি ও ফার্সি নাম ব্যবহার করেন, বাঙালি খ্রিস্টানরাও এর অনুরূপ।
উল্লেখযোগ্য বাঙালি খ্রিস্টান
[সম্পাদনা]ধর্মীয় নেতা
[সম্পাদনা]- পলিনাস কোস্টা, আর্চবিশপ
- মাইকেল রোজারিও, আর্চবিশপ
শিল্পকলা
[সম্পাদনা]- মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ১৯ শতকের কবি ও নাট্যকার
- তরু দত্ত, কবি
- রঞ্জনা বিশ্বাস, লেখক, গবেষক
- ইন্দু চট্টোপাধ্যায়, শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী
- সমর দাস, সুরকার
- এন্ড্রু কিশোর, নেপথ্য গায়ক
- কুমার বিশ্বজিত গায়ক
- রবিন ঘোষ, নেপথ্য গায়ক এবং চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, সুরকার
- টনি ডায়েস, বাংলাদেশের টেলিভিশন অভিনেতা ও পরিচালক
- পিয়া ডায়েস, অভিনেতা এবং মডেল
শিল্প
[সম্পাদনা]- স্যামসন চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
- তপন চৌধুরী (ব্যবসায়ী)
পণ্ডিত
[সম্পাদনা]- চন্দ্রমুখী বসু ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক
- আশীষ নন্দী, প্রখ্যাত ভারতীয় সমাজবিজ্ঞান
- অনিল কুমার লাভ কেমব্রিজ গণিতবিদ
পাবলিক সার্ভিস
[সম্পাদনা]- হুবার্ট কোস্টা, বাংলাদেশী-পোলিশ সংসদ সদস্য
- মেজর জেনারেল জন গোমেজ
রাজনীতি
[সম্পাদনা]আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Luchesi, Brigitte (1999), "Bangladesh", in Fahlbusch, Erwin, Encyclopedia of Christianity 1, Grand Rapids: Wm. B. Eerdmans, pp. 182–183, আইএসবিএন ০৮০২৮২৪১৩৭
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ২০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ http://www.medindia.net/news/indiaspecial/Indian-Christians-Treat-Their-Women-Better-Sex-Ratio-Highest-31076-1.htm
- ↑ World Christian Encyclopedia, Second edition, 2001 Volume 1, p. 368-371