Jump to ratings and reviews
Rate this book

মফস্বলি বৃত্তান্ত

Rate this book

185 pages

About the author

Debesh Roy

47 books20 followers
দেবেশ রায়ের জন্ম ১৯৩৬ সালে অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। ১৯৪৩ সালে তাঁর পরিবার জলপাইগুড়ি চলে আসেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় প্রত্যক্ষ বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির সূত্রে শিখেছিলেন রাজবংশী ভাষা। কলকাতা শহরেও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সে একজন গবেষণা সহকর্মী ছিলেন। তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ সালে জলার্ক পত্রিকায়। প্রথম উপন্যাস ‘যযাতি’। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি এক দশক পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৯০ সালে ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ উপন্যাসের জন্যে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০২০ সালে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে দেবেশ রায়ের জীবনাবসান হয়।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
2 (40%)
4 stars
2 (40%)
3 stars
1 (20%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 2 of 2 reviews
Profile Image for Harun Ahmed.
1,318 reviews277 followers
April 8, 2024
দেবেশ রায়ের "মফস্বলি বৃত্তান্ত " পাঠ এক অপ্রতিম অভিজ্ঞতা। মোট অধ্যায় ৮টি। প্রথম চার অধ্যায় আবার আলাদা গল্প হিসেবেও পড়া যেতে পারে।
চ্যারকেটু,খেতকেতু, টুলটুলি, বৈশাখু, বেঙ্গুকে নিয়ে লেখা এ ��ল��প ক্ষুধা, রাজনীতি ও নিরন্ন মানুষের। চ্যারকেটু বাদে অন্য প্রধান চরিত্রদের বিস্তৃতি একটিমাত্র অধ্যায় জুড়ে। হেমন্তের রাতের প্রকৃতি; বেঙ্গু, বৈশাখু আর টুলটুলির যে কোনো (যে কোনো) খাবারের খোঁজ, খেতকেতুর একটা দিন, একই কংগ্রেসের ভিন্ন ভিন্ন দলের হাতে পড়ে চ্যারকেটুর দুর্ভোগ সবই প্রায় অসহনীয় বর্ণনাধিক্যে ভরা। খেত থেকে ধান তুলতে আর তিনটা দিন বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে এরা না খেয়ে আছে তিনদিন ধরে। তিনদিন ধরে! খাবার নেই, খাবারের খোঁজ আছে আর আছে অপেক্ষা। তিনটা দিন শেষ হওয়ার। মাত্র তো তিনটা দিন! পুরো গল্প জুড়ে বর্ণনা আর বর্ণনা। বর্ণনা হেমন্তের হিম হিম শান্ত প্রকৃতির, বর্ণনা তিনদিনের অভুক্ত মানুষের সর্বব্যাপী ক্ষুধার (বেঙ্গু জাগবু না কেনে রে? জাগিলে বড় ভোক)।
আমি juxtaposition শব্দটা প্রথম জানতে পারি সালভাদর দালির চিত্রকর্ম সম্বন্ধে পড়তে গিয়ে। পাশাপাশি দুটো সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী বস্তু রেখে দ্বান্দ্বিক অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে juxtaposition। একদিকে কার্তিকের চাঁদ, চাঁদের আলোর অপার্থিব সৌন্দর্য, শীত আর শিশিরের টুপটাপ মায়াঞ্জন আর অন্যদিকে তীব্র, হিংস্র, অবশকারী ক্ষুধার বর্ণন! এই অদ্ভুত বৈপরীত্য পাঠকের মনে ভয়াবহ এক অস্বস্তির সঞ্চার করে। গল্পে প্রবেশ করে কংগ্রেস, তার উপদল, তমাল, নেংগু, আধিয়ার, সভা, পুলিশ। কিন্তু লেখক কোথাও প্রবেশ করেন না।তিনি যেন থেকেও নেই। তিনি শুধু গল্প বলে যান, দেখে যান; কোথাও অনধিকার প্রবেশ করেন না। তার ভুখা (এবং প্রায় নাঙ্গা) নায়ক চ্যারকেটু হেঁটে যেতে থাকে-

কার্তিকের কুয়াশাঢাকা ধানি জ্যোৎস্নায় মায়া হয়—ধানের দুধ শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেছে, কোমর থেকে খুলে ধানের গোছায় কাঁচিদাওটা লাগালেই খিদে মিটতে পারে—চ্যারকেটুর তিনদিনের বাসি খিদে। কিন্তু চ্যারকেটু নিজের হাতে ধানের রোয়া গেড়েছে। তাই, কার্তিকের জ্যোৎস্না আর কুয়াশাতে সে দিনের আলোর মত স্পষ্ট দেখে–ধানের ভেতর দুধ এখন জমাট হচ্ছে, এখন, কার্তিকের এই হিমে, কুয়াশায়, বাতাসে।

ধান কাটতে এখনো দেরি আছে। এ-আল ও-আল ধরে-ধরে পাকা ধান-খেতের পাকে-পাকে নিজেকে পেঁচাতে-পেঁচাতে ক্লান্ত, নিশ্চিত পায়ে, চ্যারকেটু এখনো দীর্ঘতর ক্ষুধার দিকে চলে যেতে থাকে।
Profile Image for Ranendu  Das.
155 reviews59 followers
November 28, 2015
মফস্বলী বৃতান্ত আসলে এক নিরন্তর ক্ষুধার বৃতান্ত। এই বৃতান্ত চ্যারকেটু, খেতখেতু, টুলটুলি আর তাদের পরিবারের ক্ষুধার সাথে লড়াই এ বেঁচে থাকার বৃতান্ত। চ্যারকেটু ও খেতখেতু নিতান্ত সামান্য ভাগচাষী যারা গিরির (মালিকের) জমি চষে প্রাণপণে কিন্তু তাদের নিজেদের 'প্যাটত ভোক' কাখনো মেটে না। তারা আঘুন মাসে ধান বোনে আর ক্ষুধা পেটে বসে থাকে কখন সেই ধানের গর্ভে দুধ আসবে, ফসল পাকবে, তবে দু-মুঠো খেতে পাবে। আঘুন-কার্তিকের ভরা ধানের ক্ষেত ক্ষুধার জ্বলায় দুঃস্বপ্নের মত মনে হয় আর সেই নিরন্তর ক্ষুধার দাহ যেন মাসানের (নিশি) মত তাদের মৃত্যুর পথে ডাকে।
দেশে সরকার আসে, যায়, জমির ব্যাক্তিগত মালিকানার পরিমান বদলায়, আর তার সাথে জমির মালিকও বদলায়। জমি আরও ছোটো হতে থাকে, আধিয়ার, ভাগচাষী ক্রমে ক্রমে জন খাটা মুনীষে পরিনত হতে থাকে, তাদের ব্যাক্তি পরিচয়ও আস্তে আস্তে মুছে যেতে থাকে। তাদের নিজেদের জীবন টিকিয়ে রাখার যুদ্ধের সামনে এই ধান্যময় সবুজ পৃথিবী ও তার যাবতীয় মায়া এক পরিহাস বলে মনে হয়।
এ জীবন মনে হয় শ্যামলিমা নয়, ধুসর ছায়া দ্বারা ঘেরা…

পুনশ্চঃ এই সবুজ ধানের ক্ষেতের ধূসর ভুলভুলাইয়ায় আক্রান্ত স্বয়ং লেখকও। তাই প্রথমে টুলটুলি, পরে খেতখেতুর ক্ষুধা নিবারণোদ্যোগ পর্ব বড় দীর্ঘায়িত হয়ে পড়ে; খেতখেতুর অশক্ত পায়ের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠকের গতিও মধ্যভাগে বড় শ্লথ হয়ে পড়ে যা আবার একদম শেষ পর্বে এসে কিছু গতি পায়। এই গতির তারতম্যে বিভ্রান্ত হয়ে তাই আমারও আর দ্রুতবেগে এই বইকে চার-তারা সম্মান প্রদর্শন করা হয়ে ওঠে না। তবু বাউলের সামান্য একতারায়ও যেমন জীবন এর মহার্ঘ্য সুর বাজে, তেমনি এক ভিন্ন জীবন-সুরে আমোদিত পাঠকের তিন-তারাই বা কম কি!
Displaying 1 - 2 of 2 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.