ঢাকা, ১৩ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

পুলিশের কাছ থেকে ৫ মামলার আসামিকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
১৩ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার

ঢাকার মোহাম্মদপুরে ৫ মামলার আসামিকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছিনিয়ে নেয়া ওই আসামির নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের সহযোগী ছিলেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। গতকাল মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। তিনি মোহাম্মদপুর থানার মামলা নম্বর-৬৯, রামপুরা থানার মামলা নম্বর-১৮, বাড্ডা থানার মামলা নম্বর-১৬, ক্যান্টনমেন্ট থানার মামলা নম্বর-১৬ ও চকবাজার থানার ৫৬ নম্বর মামলার আসামি। এ ঘটনার পর থেকে মোহাম্মদপুর থানার ওসি’র বিরুদ্ধেও কেউ কেউ অভিযোগ তুলছেন। তার নির্দেশেই ওই আসামিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। যদিও ডিএমপি’র তেজগাঁও ডিভিশন বলছে, কম সদস্যের টিম নিয়ে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ফিরে এসেছে পুলিশ। তাকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হবে। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি বলেন, তিনি আমাদের থানার একটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাকে  গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের একটি টিম যায়। যাওয়ার পরে স্কুলের স্টাফসহ অন্যান্য লোকজন তাকে ঘিরে দাঁড়ায়। পরে উনি সেখান থেকে পালিয়ে চলে যান। আমার পুলিশ কম ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। হাতকড়া পরানোর পর ছেড়ে দেয়ার নির্দেশের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তখন ঘুমে। অসুস্থ ছিলাম।  আমাকে সেখান থেকে অফিসার ফোন দিয়ে বলে স্যার  গ্রেপ্তার করতে আসছিলাম। কিন্তু লোকজন ধাক্কাধাক্কি করছে, এ সুযোগে তিনি পালিয়ে গেছেন। আভিযানিক টিম অবগত করে গিয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলাম। সকালে আমি তখন ঘুমে।

পুলিশের সূত্রগুলো জানায়, বুধবার সকাল ১১টায় লালমাটিয়া এলাকার বি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডে সকাল ১১টায় মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫ মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরানোর পর আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়। এছাড়াও, আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আসামি মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে ফোন করেন। এ সময় ওসি আসামিকে ধরতে যাওয়া অফিসারদের ফোন করে আসামিকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে নির্দেশ দেন। ওই আসামিকে কেন ধরতে গেছে এমন ধমক দিয়ে অফিসারদের তিনি শাসন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শরীফুল জানান, সকাল ১১টায় বেশক’জন অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম রাস্তা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আশপাশে থাকা ৮-১০জন সিকিউরিটি গার্ড ও আশপাশে কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর আতর্কিত হামলা করে। তাদের ওপর হামলার পরও তারা ওই লোককে হাতকড়া পরায় পুলিশ। তখন ফোনে কার সঙ্গে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দিয়েছে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম ওই লোকের নামে বৈষম্যবিরোধর একাধিক মামলা আছে। ���নে হয়েছে সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন মিলে পুলিশকে মেরে ফেলবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে তারা। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল ১১টার দিকে এভোরেজ স্কুলের সামনে গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিলেন। এ সময় পুলিশ এসে তার এক হাতে হাতকড়াও লাগায়। সঙ্গে সঙ্গে কিছু লোক পুলিশকে ঘেরাও করে ধরে তাকে ভিতরে নিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। তখন মোবাইলে থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তার হাতকড়া খুলে দিয়ে চলে যায়। তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম আসামি গ্রেপ্তার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। আসামি গ্রেপ্তার করার বিষয়টি আমি অবগত। কিন্তু আসামি গ্রেপ্তারের সময় ওই আসামির লোকজন মব সৃষ্টি করে আমাদের পুলিশের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ আসামিকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়। তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইব্‌নে মিজান মানবজমিনকে বলেন, বিষয়টি প্রথমে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি জেনেছি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি অল্পসংখ্যক পুলিশ নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল। পরে পরিস্থিতি অনুকূলে না দেখে ফিরে আসে তারা। আসামি ছেড়ে দেয়ার মতো কিছু ঘটেনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

পাঠকের মতামত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের দাওয়াত থাকল মোহাম্মদপুর থানায়

জনতার আদালত
১৩ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১:২০ পূর্বাহ্ন

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status