উদগমণ্ডলম
উদগমণ্ডলম உதகமண்டலம் ঊটি | |
---|---|
শৈলশহর | |
স্থানাঙ্ক: ১১°২৫′ উত্তর ৭৬°৪২′ পূর্ব / ১১.৪১° উত্তর ৭৬.৭০° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | তামিল নাড়ু |
জেলা | নীলগিরি |
সরকার | |
• ধরন | বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত পৌরসভা |
• শাসক | উদগমণ্ডলম পৌরসভা |
আয়তন | |
• মোট | ৩০.৬৭ বর্গকিমি (১১.৮৪ বর্গমাইল) |
উচ্চতা[১] | ২,২৪০ মিটার (৭,৩৫০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[২] | |
• মোট | ৮৮,৪৩০ |
• জনঘনত্ব | ২,৯০০/বর্গকিমি (৭,৫০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• সরকারী | তামিল |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৬৪৩ ০০১ |
দূরভাষ কোড | ৯১৪২৩ |
যানবাহন নিবন্ধন | (টি.এন.-৪৩) |
জলবায়ু | উপক্রান্তীয় উচ্চভূমি (কোপেন) |
বৃৃষ্টিপাত | ১,২৩৮ মিমি (৪৯ ইঞ্চি) |
গড় বার্ষিক তাপমাত্রা | ১৪.৪ °সে (৫৮ °ফা) |
Temperature from Batchmates.com[৩] |
উদগমণ্ডলম (উটাকামুন্ড নামেও পরিচিত (তামিল: உதகமண்டலம் , প্রতিবর্ণী. উদগমণ্ডলম্) হলো দক্ষিণ ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্যের নীলগিরি জেলার একটি শহর ও পৌরসভা৷ শহরটি নীলগিরি জেলার সদরদপ্তর, কোয়েম্বাটুর শহর থেকে ৮৬ কিলোমিটার উত্তরে ও মহীশূর শহর থেকে ১২৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত৷ এটি একটি বিখ্যাত শৈলশহর, যা নীলগিরি পর্বতমালা অঞ্চলে অবস্থিত৷
, সংক্ষেপে স্থানীয়দের কাছে উধগৈ এবং ঊটি নামে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়, ( )(মূলত টোডা জাতির বাসভূমি উদগমণ্ডলমটি খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনস্থ হয়৷ এখানকার অর্থনীতি পর্যটন, কৃৃষিকাজ, ভেষজ প্রক্রিয়াকরণ এবং ফটোগ্রাফিক ফিল্মের ওপর নির্ভর৷ শহরটি নীলগিরি ঘাট সড়ক এবং নীলগিরি পার্বত্য রেলওয়ের সাথে যুক্ত৷ গ্রীষ্মকালে ঊটির অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রচুর পর্যটককে আকর্ষণ করে৷[৪]
নামকরণের ইতিহাস
[সম্পাদনা]এই স্থানের নামের উৎপত্তি অস্পষ্ট৷ স্থানটির সর্বপ্রথম লিখিত নামের সন্ধান পাওয়া যায় কোনো অজ্ঞাত ব্যক্তির লেখা ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে লেখা 'মাদ্রাজ গ্যাজেট' এ, নামটি ছিলো উটোকিমুন্ড (Wotokymund)৷[৫] গোড়ার দিকে এই স্থানের নাম উট্টকলমান্ডু (OttakalMandu) ছিলো বলেও জানা যায়৷ স্থানীয় টোডাদের ভাষাতে গ্রামকে বলা হতো "মান্ডু", তারই ইংরাজীকৃৃত উচ্চারণ ছিলো "মান্ড"৷[৬] নামের প্রথম অংশটি সম্ভবত কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নীলগিরি উপত্যকা ও সমভূমির স্থানীয় নামের অপভ্রংশ থেকে এসেছে৷[৭]
আবার উটাকা বা উটক নামের বিশ্লেষণ করলে হয় উট্ট-কল, স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ 'একটি পাথর'৷ মনে করা হয় স্থানীয় টোডা জাতির পবিত্র পূজ্য কোনো পাথরের উপস্থিতির কারণেই এই নাম হয়েছে৷ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য ভাষার মিশ্রণে তা উদগমণ্ডলম হয়ে যায়৷আবার ব্রিটিশ শাসনকালে এই উদগনণ্ডলম নাম থেকেই পর্যায়ক্রমে উটাকামুন্ড বা ঊটকমুন্ড এবং আরো পরে ছোটকরে ঊটি নামটি এসেছে৷[৮]
এখানে পাহাড়ের ঢাল বরাবর নীলকুরিঞ্জি গাছের নীলফুলের আধিক্যের জন্য পাহাড়টি নীলগিরি পর্বতমালা নামে পরিচিত৷ এরই অন্যতম পর্যটনস্থলটি হলো উদগমণ্ডলম৷[৫][৯][১০]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উদগমন্ডলম একটি উপজাতি প্রধান ও টোডা, বাডাগাসহ বিভিন্ন পাহাড়ি উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল, যারা বহুবছর ধরে সহাবস্থান ও আন্তঃবাণিজ্যের মাধ্যমে বসবাস করে আসছে৷ নীলগিরি পার্বত্যঅঞ্চলের প্রধান উপজাতিগুলি হলো টোডা, কোটা, ইরুলা ও কুরুম্ব প্রভৃতি৷ বাডাগাদের বর্তমানে কন্নড়দের একটি অংশ বলে গণ্য করা হয়৷
১১১৭ খ্রিষ্টাব্দে হোয়সল রাজ্যের রাজা বিষ্ণুবর্ধনের সময়ে তার মুনশী পুনিশের লেখায় নীলগিরির উদগমণ্ডলম অঞ্চলের আদিবাসিন্দা টোডা অপজাতির উল্লেখ পাওয়া যায়৷[৯] টোডারা মহিষের দ্বারা উপত্যকা অঞ্চলে জলবহন করতো আর বাডাগারা ক্ষেত-খামার তৈরীর জন্য উল্লেখ্য ছিলো৷[১০] নীলগিরি অঞ্চল বহুবার বহু সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়, সেগুলি হলো- সাতবাহন সাম্রাজ্য, পশ্চিম গঙ্গ রাজবংশ, কদম্ব রাজবংশ, রাষ্ট্রকূট রাজবংশ, হোয়সল সাম্রাজ্য, বিজয়নগর সাম্রাজ্য এবং মহীশূরের ওয়াড়িয়ার সাম্রাজ্য৷[৯][১১][১২][১৩][১৪] অষ্টাদশ শতাব্দীর দিকে টিপু সুলতান নীলগিরির দখল নেন এবং নীলগিরির লুক্কাইত গুহার সীমানা অবধি সাম্রাজ্যবিস্তার করেন৷[১০] ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও টিপু সুলতানের মধ্যে হওয়া শ্রীরঙ্গপত্তনের চুক্তির মাধ্যমে সমর্পাত ভূমি হিসাবে নীলগিরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়৷
১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ কোয়েম্বাটুরের সংগ্রাহক জন সুল্লিভন এর সাথে তার সহকারী দুজন এন.ডব্লু.কিন্ডারস্লে এবং জে.সি. হুইশ উক্ত স্থানের বিষয়ে সমীক্ষা করেন৷ সুল্লিভন ১৮১৯ খ্রিষ্টাব্দে কোটাগিরির সামান্য উত্তরে দিমভাট্টিতে শিবির স্থাপন করেন এবং তার প্রাকৃৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন৷ তিনি থমাস মুনরোকে লেখেন, " ইট রিসেম্বেল্স সুইজারল্যান্ড, মোর দ্যান এনি কান্ট্রি অব ইউরোপ৷ দ্য হিলস বিউটিফুলি উডেড এন্ড ফাইন স্ট্রং স্প্রিং উইথ রানিং ওয়াটার ইন এভ্রি ভ্যালি" (এটি অনেকটা সুইজারল্যান্ডে মতো এবং ইউরোপের যেকোনো দেশের থেকে অধিক মনোরম৷ পাহাড়ি অঞ্চলটি বনাচ্ছাদিত এবং উপত্যকিগুলির প্রতিটিতে সুন্দর ঝর্ণাও রয়েছে)৷[১৫] টোডা জাতির লোক শহরাঞ্চলটি সুল্লিভনকে সমর্পন করলে তিনি দিমভাট্টিতে একটি অট্টালিকা নির্মাণ করেন৷ তিনি ঐবছরই সিরুমুগৈ থেকে দিমভাট্টি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন৷ ১৮২৩ এর মধ্যে রাস্তার নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয় এবং ১৮৩০ এর মধ্যে তা কুন্নুর অবধি বিস্তৃত হয়৷[৫]
ঊটির অরনমোর প্যালেস মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গ্রীষ্মকালীন সদর হিসাবে নির্বাচিত হয়৷ ব্রিটিশ শাসনকালে এটি ব্রিটিশদের গ্রীষ্মকালীন দর্শনীয় স্থানগুলির অন্যতম ছিলো৷[১৬] ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাদ্রাজ সৈন্যদল(মদ্রাজপ পডৈয়ণি)-এর সেনাছাউনিটি এরই সন্নিকটে ওয়েলিংটনে অবস্থিত৷[১৭][১৮] স্বাধীনতার পর এটি একটি জনপ্রিয় শৈলপর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়৷
জনতত্ত্ব
[সম্পাদনা]২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ভারতের জনগণনা অনুসারে উদগমণ্ডলম শহরের জনসংখ্যা ৮৮৪৩০ জন, যার মধ্যে ৪৩০৮২ জন পুরুষ ও ৪৫৩৪৮ জন নারী৷ প্রতি হাজার পুরুষে ১০৫৩ জন নারী৷ ৬ বছর অনুর্দ্ধ ৭৭৮১ জন শিশু, যা সমগ্র জনসংখ্যার ৮.৮০ %৷ ৬ বছরোর্দ্ধ জনসংখ্যার ৯০.০৭% অর্থাৎ ৭২৬৪১ জন সাক্ষর৷[১৯] পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৯৪.৫৩% এবং নারীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮৫.৮৬%, যা ভারতে জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি৷
ধর্ম
[সম্পাদনা]২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ধর্মীয় জনগণনা অনুসারে উদগমণ্ডলম শহরটির ৬৪.৩৬% হিন্দু, ২১.২৫% খ্রিস্টান, ১৩.৩৭% মুসলিম, ০.০৩% শিখ, ০.৩০% বৌদ্ধ, ০.৪০% জৈন, ০.২৮% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এবং ০.০২% কোনো ধর্মকেই নির্দেশ করেননি৷[২০]
ভাষা
[সম্পাদনা]উদগমণ্ডলম শহরে প্রচলিত ভাষাসমূহের পাইচিত্র তালিকা নিম্নরূপ -
তামিল ভাষা ঐ রাজ্য তথা উদগমণ্ডলমের সরকারী ভাষা৷
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "About Municipality"। municipality.tn.gov.in। ১৫ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;census2011
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Ooty: In the Lap of the Nilgiris"। batchmates.com। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ "Ooty in Tamilnadu"। Tamilnadu.com। ১৪ ডিসেম্বর ২০১২। ২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৯।
- ↑ ক খ গ "History"। ooty.net। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ Mathew Chacko, Pariyaram (২০০৫)। Tribal Communities and Social Change। SAGE Publications India, 2005। পৃষ্ঠা 180, 188। আইএসবিএন 978-0761-933-30-4।
- ↑ Price, Sir Frederick (১৯০৮)। Ootacamund, A History। Madras Government Press। পৃষ্ঠা 14–15।
- ↑ "Ooty History"। ooty.ind.in। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ ক খ গ Francis, Walter (১৯০৮)। Madras District Gazetteers: The Nilgiris। 1। New Delhi: Asian Educational Services। পৃষ্ঠা 90–94, 102–105। আইএসবিএন 978-81-2060-546-6।
- ↑ ক খ গ "Ooty History"। evoire.com। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ Senapati, Nilamani; Sahu, N. K. (১৯৫৫)। Gazetteers of India: Nilgiris District। Government Press। পৃষ্ঠা 3, 199–201, 866।
The location of the Nilgiris is unique that it was in the tri-junction of ancient Tamil kingdoms of Cholas, Cheras and the Pandyas. Hence, it was under Cheras, Cholas or local chieftains at various...
- ↑ Sundaresan, C.S. (১ জানুয়ারি ২০০৭)। South Asia and Multilateral Trade Regime: Disorders for Development। Regal Publications। পৃষ্ঠা 81। আইএসবিএন 978-8189-915-31-5।
- ↑ Indian Navy (১৯৮৯)। Maritime Heritage of India। Notion Press। পৃষ্ঠা 244। আইএসবিএন 978-9352-069-17-0।
At their peak, the Cholas ruled over not just the whole of south India, but also conquered island nations..
- ↑ Sagar, Ravi। "Decoding the Nilgiris" (পিডিএফ)। India Brand Equity Foundation: 53। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৯।
Not even the dynastic rulers—the Cheras, the Cholas, the Pandiyas, the Rashtrakutas, the Gangas, the Pallavas, the Kadambas and the Hoysalas—can be credited with discovering this jewel (Nilgiris) in their crown.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;john
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ The Illustrated Weekly of India (ইংরেজি ভাষায়)। Published for the proprietors, Bennett, Coleman & Company, Limited, at the Times of India Press। ১৯৭৫।
- ↑ History of Ootacamund by Sir Frederick Price, Madras Government Press, 1908.
- ↑ Sir Arthur Lawley, Eloquent Knight Errant, D. J. Hogg. Chapter 5: "Ruler of the Raj, Ooty, Lady Lawley Cottage" (Western Australian Red Cross), 2008 iBooks
- ↑ https://www.census2011.co.in/data/town/803564-udhagamandalam-tamil-nadu.html
- ↑ "Population By Religious Community - Tamil Nadu" (XLS)। Office of The Registrar General and Census Commissioner, Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16_Town.html