জর্জ অরওয়েল
জর্জ অরওয়েল | |
---|---|
![]() ১৯৪৩ সালে জর্জ অরওয়েলের তোলা ছবি। | |
জন্ম | এরিক আর্থার ব্লেয়ার ২৫ জুন ১৯০৩ মোতিহারি, চম্পারণ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান পূর্ব চম্পারণ জেলা, বিহার, ভারত) |
মৃত্যু | ২১ জানুয়ারি ১৯৫০ ইউনিভার্সিটি কলেজ হাসপাতাল, লন্ডন, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য | (বয়স ৪৬)
সমাধিস্থল | সাটন কোর্টেনে, অক্সফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড |
ছদ্মনাম | জর্জ অরওয়েল |
পেশা | ঔপন্যাসিক, রাজনৈতিক লেখক ও সাংবাদিক |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | ইটন কলেজ |
ধরন | ডিস্টোপিয়া, স্যাটায়ার |
বিষয় | ফ্যাসিবাদ-বিরোধী এবং স্টালিনবাদ-বিরোধী, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র, সাহিত্য সমালোচনা, সংবাদ, বিরোধিতা |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | অ্যানিম্যাল ফার্ম নাইন্টিন এইটি-ফোর |
সক্রিয় বছর | ১৯২৮–১৯৫০ |
দাম্পত্যসঙ্গী | আইলিন ও'শাঘনেসি (১৯৩৫-১৮৪৫, তার মৃত্যু) সোনিয়া ব্রাউনেল (১৯৪৯-১৯৫০, তার মৃত্যু) |
এরিক আর্থার ব্লেয়ার (জুন ২৫, ১৯০৩ - জানুয়ারি ২১, ১৯৫০) একজন কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক লেখক। অবিভক্ত ভারতের বাংলা প্রদেশের মোতিহারীতে জন্ম হয়েছিল তার।[১] বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে তিনি জর্জ অরওয়েল ছদ্মনামে সমধিক পরিচিত। তাঁর কাজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বচ্ছ গদ্য, সামাজিক সমালোচনা, সর্বগ্রাসী সর্বাত্মকবাদ (কর্তৃত্বপরায়ণ সাম্যবাদ এবং ফ্যাসিবাদ উভয়ের বিরোধিতা), এবং গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের সমর্থন।[২][৩]
তিনি আজীবন স্বৈরাচার ও একদলীয় মতবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। রিচার্ড ওয়ামেসলে ব্লেয়ার ও ইদা মাবেল লিমুজিন দম্পতির একমাত্র সন্তান অরওয়েল মাত্র ৪৬ বছর বয়সে যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন।
অরওয়েল সর্বাধিক পরিচিত তাঁর রূপকধর্মী উপন্যাস অ্যানিম্যাল ফার্ম (১৯৪৫) এবং ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস নাইন্টিন এইটি-ফোর (১৯৪৯) এর জন্য, যদিও তাঁর রচনাসমূহ সাহিত্য সমালোচনা, কবিতা, কথাসাহিত্য এবং বিতর্কমূলক সাংবাদিকতাও অন্তর্ভুক্ত করে। তাঁর অ-কথাসাহিত্যিক রচনাগুলো, যেমন দ্য রোড টু উইগান পিয়ার (১৯৩৭)-এ তিনি উত্তর ইংল্যান্ডের শিল্পাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। এছাড়াও তার হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া (১৯৩৮)-তে তিনি স্পেনের গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯) রিপাবলিকান পক্ষের হয়ে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। তাঁর রাজনীতি, সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রবন্ধগুলোর মতোই সমালোচনামূলকভাবে প্রশংসিত।
অরওয়েলের কাজ জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এখনও প্রভাবশালী। "অরওয়েলিয়ান" বিশেষণটি — যা সর্বগ্রাসী ও কর্তৃত্ববাদী সামাজিক অনুশীলন বর্ণনা করে — ইংরেজি ভাষার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন তাঁর অনেক নয়াশব্দবাদ বা (নিওলজিজম) যেমন "বিগ ব্রাদার", "থট পুলিশ", "রুম ১০১", "নিউস্পিক", "মেমোরি হোল", "ডাবলথিংক" এবং "থটক্রাইম" ইংরেজি ভাষার অংশ হয়ে গেছে।[৪][৫] ২০০৮ সালে, দ্য টাইমস অরওয়েলকে ১৯৪৫ সালের পর দ্বিতীয় সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ লেখক হিসেবে নামকরণ করে।[৬]
জীবন
[সম্পাদনা]শৈশব ও কৈশোর
[সম্পাদনা]
এরিক আর্থার ব্লেয়ার ১৯০৩ সালের ২৫ জুন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমানে বিহার) মোতিহারিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিজেকে একটি "নিম্ন-উচ্চ-মধ্যবিত্ত" পরিবারের সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।[৭][৮] তার প্র-প্র-পিতামহ, চার্লস ব্লেয়ার, একজন ধনী দাসমালিক জমিদার ছিলেন এবং জামাইকার দুটি প্ল্যান্টেশনের অনুপস্থিত মালিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন;[৯] যিনি ডরসেটের বাসিন্দা ছিলেন, তিনি ওয়েস্টমোরল্যান্ডের ৮ম আর্লের কন্যা লেডি মেরি ফেনকে বিয়ে করেছিলেন।[১০] তার দাদা, টমাস রিচার্ড আর্থার ব্লেয়ার, একজন অ্যাংলিকান ধর্মযাজক ছিলেন। অরওয়েলের পিতা ছিলেন রিচার্ড ওয়ালমেসলে ব্লেয়ার, যিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের আফিম বিভাগে সাব-ডেপুটি আফিম এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন, চীনে বিক্রির জন্য আফিম উৎপাদন ও মজুত করার তত্ত্বাবধান করতেন।[১১]
অরওয়েলের মা, ইডা মেবেল ব্লেয়ার (née Limouzin), বার্মার ���ৌলামাইনে বেড়ে ওঠেন, যেখানে তার ফরাসি বাবা অনুমানমূলক উদ্যোগের সাথে জড়িত ছিলেন।[১০] এরিকের দুই বোন: মার্জোরি, পাঁচ বছরের বড়; এবং এভ্রিল, পাঁচ বছরের ছোট। এরিক যখন এক বছর বয়সে, তার মা তাকে এবং মার্জোরিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যান।[১২][n ১] ২০১৪ সালে মোতিহারিতে অরওয়েলের জন্মস্থান এবং পৈতৃক বাড়ির সংস্কারের কাজ শুরু হয়।[১৩]
১৯০৪ সালে, ইডা তার সন্তানদের সাথে অক্সফোর্ডশায়ারের হেনলি-অন-থেমসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরিক তার মা এবং বোনদের সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯০৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি সংক্ষিপ্ত পরিদর্শন ছাড়া, তিনি ১৯১২ সাল পর্যন্ত তার বাবার সাথে দেখা করেননি।[১৪][১১] পাঁচ বছর বয়সে, এরিককে হেনলি-অন-থেমসের একটি কনভেন্ট স্কুলে একজন দিবা শাখার ছাত্র হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। এটি ছিল ফরাসি উরসুলিন নানদের দ্বারা পরিচালিত একটি ক্যাথলিক কনভেন্ট।[১৫] তার মা তাকে পাবলিক স্কুলে পড়াতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পরিবার ফি বহন করতে সক্ষম হয় নি। তার মামা চার্লস লিমুজিনের মাধ্যমে, ব্লেয়ার সেন্ট সাইপ্রিয়ানস স্কুল, ইস্টবোর্ন, ইস্ট সাসেক্সে বৃত্তি লাভ করেন।[১১] ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে এসে তিনি পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্কুলে থাকেন, শুধুমাত্র স্কুল ছুটির সময় বাড়িতে ফিরতেন। যদিও তিনি হ্রাসকৃত ফি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, তবে তিনি "শীঘ্রই বুজতে পারলেন যে তিনি একজন দরিদ্র ঘর থেকে এসেছেন।[১৬] ব্লেয়ার স্কুলটিকে ঘৃণা করতেন[১৭] এবং অনেক বছর পরে তিনি সেখানে কাটানো সময়ের ভিত্তিতে "এমন, এমন ছিল আনন্দগুলো" নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন, যা তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। সেন্ট সাইপ্রিয়ান্সে ব্লেয়ার প্রথম সিরিল কনোলির সাথে দেখা করেন, যিনি একজন লেখক হয়েছিলেন এবং যিনি হরাইজন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে অরওয়েলের বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।[১৮]
উল্লেখযোগ্য বইসমূহ
[সম্পাদনা]জর্জ অরওয়েল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে লেখালেখি থেকে শুরু করে উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা রচনা করেছেন।
উপন্যাসসমূহ
[সম্পাদনা]- বার্মিজ ডেজ (১৯৩৪)
- এ ক্লার্জিম্যানস ডটার (১৯৩৫)
- কিপ দ্য এসপিডিস্ট্রা ফ্লাইং (১৯৩৬)
- কামিং আপ ফর এয়ার (১৯৩৯)
- অ্যানিম্যাল ফার্ম (১৯৪৫)
- নাইন্টিন এইটি-ফোর (১৯৪৯)
প্রবন্ধসমূহ
[সম্পাদনা]- ডাউন এন্ড আউট ইন প্যারিস এন্ড লন্ডন (১৯৩৩)
- দ্য রোড টু উইগান পিয়ের (১৯৩৭)
- হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া (১৯৩৮)
তবে তার বেশিরভাগ লেখাই ছিল সংবাদপত্রের জন্য লেখা সভ্যতা ও রাজনৈতিক সমালোচনামূলক নিবন্ধ।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Crick, Bernard (২০০৪)। "Blair, Eric Arthur [George Orwell] (1903–1950)" ((সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন)) । Oxford Dictionary of National Biography। Oxford: Oxford University Press। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/31915। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ Gale, Steven H. (১৯৯৬)। Encyclopedia of British Humorists: Geoffrey Chaucer to John Cleese, Volume 1। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 823।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;thinktank
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ McCrum, Robert (১০ মে ২০০৯)। "The masterpiece that killed George Orwell"। The Observer। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "Quotations: G. Orwell"। Oxford English Dictionary। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "The 50 greatest British writers since 1945"। The Times। ৫ জানুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Crick, Bernard (২০০৪)। "Eric Arthur Blair [pseud. George Orwell] (1903–1950)"। Oxford Dictionary of National Biography। Oxford: Oxford University Press।
- ↑ Orwell, George (১৯৩৭)। "8"। The Road to Wigan Pier। Left Book Club। পৃষ্ঠা 1।
- ↑ "Legacies of British Slavery"। Legacies of British Slavery। University College London। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০২৪।
- ↑ ক খ Stansky, Peter; Abrahams, William (১৯৯৪)। "From Bengal to St Cyprian's"। The Unknown Orwell and Orwell: The Transformation। Stanford, California: Stanford University Press। পৃষ্ঠা 5–12। আইএসবিএন 978-0804723428।
- ↑ ক খ গ Taylor, D.J. (২০০৩)। Orwell: The Life। Henry Holt and Company। আইএসবিএন 978-0805074734। ; Chowdhury, Amlan (১৬ ডিসেম্বর ২০১৮)। "George Orwell's Birthplace in Motihari to Turn Museum"। www.thecitizen.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ; Haleem, Suhail (১১ আগস্ট ২০১৪)। "The Indian Animal Farm where Orwell was born"। BBC News। ; "Arena News Week: Frank Maloney, George Orwell Museum and Giant Panda Tian Tian"। BBC (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। ; Rahman, Maseeh (৩০ জুন ২০১৪)। "George Orwell's birthplace in India set to become a museum"। TheGuardian.com।
- ↑ ক খ Crick (1982), p. 48
- ↑ "Renovation of British Author George Orwell's house in Motihari begins"। IANS। news.biharprabha.com। ২৯ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪।
- ↑ A Kind of Compulsion 1903–36, xviii
- ↑ Bowker, Gordon। George Orwell। পৃষ্ঠা 21।
- ↑ Bowker p. 30
- ↑ Jacob, Alaric (১৯৮৪)। "Sharing Orwell's Joys, but not his Fears"। Norris, Christopher। Inside the Myth। Lawrence and Wishart।
- ↑ The Oxford Companion to Twentieth-century Literature in English। Oxford University Press। ১৯৯৬। পৃষ্ঠা 517।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "n" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="n"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি
- ১৯০৩-এ জন্ম
- ১৯৫০-এ মৃত্যু
- ইংরেজ সাহিত্যিক
- ধর্মের সমালোচক
- ২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক
- ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ঔপন্যাসিক
- ইংরেজ সমাজতাত্ত্বিক
- ঔপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশ ব্যক্তি
- ২০শ শতাব্দীর নাস্তিক
- ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ইতিহাসবিদ
- ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ কবি
- ২০শ শতাব্দীর ছদ্মনামধারী লেখক
- নাস্তিক দার্শনিক
- ব্রিটিশ সমাজতান্ত্রিক বিরোধী
- ব্রিটিশ হোম গার্ডের সৈনিক
- ইংরেজ নাস্তিক
- ইংরেজ প্রাবন্ধিক
- ইংরেজ পুরুষ সাংবাদিক
- ফরাসি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
- মুক্তচিন্তার লেখক
- বিহারের সাংবাদিক
- আধুনিকতাবাদী লেখক
- সংস্কৃতির দার্শনিক
- শিক্ষার দার্শনিক
- ইতিহাসের দার্শনিক
- ভাষার দার্শনিক
- সাহিত্যের দার্শনিক
- সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক
- যুদ্ধের দার্শনিক
- রাজনৈতিক দার্শনিক
- সামাজিক দার্শনিক
- পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক
- সাম্যবাদ সম্পর্কে লেখক
- ইংরেজ দিনলিপিকার
- ব্রিটিশ অনুসন্ধানী সাংবাদিক