বিষয়বস্তুতে চলুন

তুমকুর জেলা

স্থানাঙ্ক: ১৩°২০′ উত্তর ৭৭°০৬′ পূর্ব / ১৩.৩৪° উত্তর ৭৭.১° পূর্ব / 13.34; 77.1
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তুমকুর জেলা
তুমকুরু
কল্পতরুনাড়ু
কর্ণাটকের জেলা
দেবরায়নদুর্গ
ডাকনাম: নারিকেল নগরী, শিক্ষানগরী
কর্ণাটকে তুমকুর জেলার অবস্থান
কর্ণাটকে তুমকুর জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ১৩°২০′ উত্তর ৭৭°০৬′ পূর্ব / ১৩.৩৪° উত্তর ৭৭.১° পূর্ব / 13.34; 77.1
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যকর্ণাটক
সদরতুমকুর
তালুকতুমকুর,
সিরা,
গুব্বি,
তিপটুর,
তুরুবেকেরে,
কুণিগল,
মধুগিরি,
পাবাগাড়া,
কোরটাগেরে,
চিকনায়কনহাল্লি.
সরকার
 • ডেপুটি কমিশনাররাকেশ কুমার, আই.এ.এস
 • জেলা ইন-চার্জ মিনিস্টারজে. সি. মধুস্বামী (বিজেপি)
 • জেলা পঞ্চায়েত সভাপতিলাত রবি কুমার (জিডিএস জনতা দল)
আয়তন
 • মোট১০,৫৯৭ বর্গকিমি (৪,০৯২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২৬,৭৮,৯৮০
 • জনঘনত্ব২৫০/বর্গকিমি (৬৫০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • দাপ্তরিককন্নড়, ইংরেজি
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
টেলিফোন কোড+ ৯১ (০) ৮১৬
যানবাহন নিবন্ধনKA-06 (কেএ-০৬: তুমকুর), KA-44 (কেএ-৪৪: তিপটুর), KA-64 (কেএ-৬৪: মধুগিরি)
ওয়েবসাইটtumkur.nic.in

তুমকুর জেলা, হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি জেলা৷ এটি কর্ণাটকের চারটি প্রশাসনিক বিভাগের বেঙ্গালুরু বিভাগের অন্তর্গত৷ এটি পূর্বতন মহীশূর রাজ্যের অন্তর্গত ছিলো৷ ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের ব্রিটিশ কমিশনার স্যার মার্ক কুবন বর্তমান তুমকুর ও চিত্রদুর্গ জেলা জেলা নিয়ে চিতলদ্রুগ জেলা গঠন করেন ও তুমকুর শহরে এর প্রশাসনিক রাজধানী পত্তন ঘটান৷ ১৮৩৫ থেকে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ অবধি স্যার রিচার্ড স্টিওয়ার্ট ডোবস এই জেলার সর্বপ্রথম কালেক্টর হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন৷ তিনিই সর্বপ্রথম এখানে প্রশাসনিক স্তরে মনরো পদ্ধতি চালু করেন৷ [] ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে স্যার লেউইন বেন্থাম বৌরিং চিতলদ্রুগ জেলাটিকে প্রশাসনিকভাবে ভেঙে তুমকুর (নন্দীদুর্গ বিভাগ) এবং চিত্রদুর্গ (নগর বিভাগ) আলাদা দুটি জেলা ঘোষণা করেন৷ [] জেলাটির জেলাসদর তুমকুর শহরে অবস্থিত৷ জেলাটির সর্বমোট ক্ষেত্রফল ১০,৫৯৮ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২৬,৭৮,৯৮০ জন (২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা), যার মধ্যে ১৯.৬২ শতাংশ শহরবাসী৷,[] এটি সড়কপথে চৌচক্রী যানে বেঙ্গালুরু থেকে দেড় ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত৷ জেলাটি নারিকেল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হওয়ার এর ডাকনাম 'কল্পতরু নাড়��'৷ এটি কর্ণাটকের একমাত্র জেলা যা দুটি খণ্ডে বিভক্ত তথা জেলাটির পাবাগাড়া তহশিলটির সাথে ভৌগোলিকভাবে এই জেলাটির কোনো সংযোগ নেই৷

প্রশাসনিক বিভাগ

[সম্পাদনা]

আয়তনের বিচারে কর্ণাটক রাজ্যের তুমকুর তৃতীয় বৃহত্তম জেলা, বেলগাভি এবং গুলবার্গা জেলার পরেই। তুমকুর জেলায় দশটি তালুক, এগারোটি বিধানসভা কেন্দ্র এবং অন্যান্য জেলার সাথে ভাগে মোট তিনটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে।

অবস্থান

[সম্পাদনা]

তুমকুর জেলাটির সাথে আটটি জেলার সীমান্ত রয়েছে, যা ওই রাজ্যের অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। জেলাটির উত্তর দিকে চিত্রদুর্গ জেলা, পশ্চিম দিকে হাসান এবং চিকমাগালুর জেলা, দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মাণ্ড্য জেলা, দক্ষিণ দিকে রামনগর এবং বেঙ্গালুরু গ্রামীণ জেলা, দক্ষিণ দিকে চিক্কাবল্লাপুর জেলা এবং উত্তর-পূর্ব দিকে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের অনন্তপুর জেলা রয়েছে।

জনতত্ত্ব

[সম্পাদনা]
ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.ব.প্র. ±%
১৯০১৬,৭১,৮০১—    
১৯১১৭,৩৮,৭৮৬+০.৯৫%
১৯২১৭,৭৬,৮২৫+০.৫%
১৯৩১৮,৬৩,২২৭+১.০৬%
১৯৪১৯,৫৫,৮০৯+১.০২%
১৯৫১১১,৫১,৩৬২+১.৮৮%
১৯৬১১৩,৬৭,৪০২+১.৭৩%
১৯৭১১৬,২৭,৭২১+১.৭৬%
১৯৮১১৯,৭৭,৮৫৪+১.৯৭%
১৯৯১২৩,০৫,৮১৯+১.৫৫%
২০০১২৫,৮৪,৭১১+১.১৫%
২০১১২৬,৭৮,৯৮০+০.৩৬%
উৎস:[]
কুণিগল মন্দির
সিদ্ধাপুর, যদিয়ুর

২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সর্বশেষ জনগণনা অনুসারে তুমকুর জেলাটির মোট জনসংখ্যা ২৬,৭৮,৯৮০ জন,[] যা কুয়েত রাষ্ট্রের জনসংখ্যা[] বা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য।[] জনগণনা অনুসারে জেলাটিতে ৯০.১০ শতাংশ হিন্দু তথা ২৪,১৩,৮১২ জন, ৯.১৮ শতাংশ মুসলিম তথা ২,৪৫,৯২৩ জন, ০.৩৪ শতাংশ খ্রিস্টান তথা ৯,১৩০ জন এবং ০.১৯ শতাংশ তথা ৫০৫৬ জন জৈন বাস করেন। জনসংখ্যার বিচারে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে এই জেলাটি ১৫০ তম স্থানে রয়েছে। [] জনসংখ্যার বিচারে তুমকুর জেলাটি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু, বেলগাভি এবং মহীশূর জেলার পরে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। জেলাটিতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৫৩ জন বাস করেন। [] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে এর মধ্যে তুমকুর জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩.৭৪ শতাংশ।[] তুমকুর জেলায় প্রতি হাজার পুরুষে ৯৮৪ জন মহিলা বাস করেন। [] জেলাটির মোট সাক্ষরতার হার ৭৫.১৪ শতাংশ, যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮২.৮১ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৬৭.৩৮ শতাংশ। []

ভূগোল

[সম্পাদনা]

সমগ্র জেলা জুড়ে মূলত উচ্চভূমি থাকলেও নদী উপত্যকা অঞ্চল গুলির উচ্চতা অধিক নয়। জেলাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে ৪,০০০ ফুট (১,২০০ মি) উচ্চ পর্বত শ্রেণী বিস্���ৃত, যা কৃষ্ণা এবং কাবেরী নদীর মধ্যে প্রাকৃতিক জল বিভাজিকা গঠন করেছে। মূল জলধারা গুলি হলো জয়মঙ্গল নদ এবং শিমশা নদী। তুমকুর জেলার ভূমি খনিজ সম্পদে পূর্ণ, পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণে লৌহ আকরিক উত্তোলিত হয়, এছাড়াও উচ্চমান সম্পন্ন পাথরও এখানে পাওয়া যায়। পাহাড়ের ঢাল বরাবর দেবরায়নদুর্গ ঢাল গভীর অরণ্যাবৃত। এখানে চিতাবাঘ, ভারতীয় হায়না, ভাল্লুক, বন্য শুয়োর প্রভৃতি বন্য জন্তুর উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। যদিও ‌উনবিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে এই অঞ্চলগুলোতে বাঘের উপস্থিতির পরিসংখ্যান ছিল বর্তমান পরিস্থিতি পুনরায় পরিসংখ্যানের উপর বিবেচ্য। [] এখানকার গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত 39  ইঞ্চি।

ঐতিহাসিক বিবরণ

[সম্পাদনা]
ইতিহাসে তুমকুর

তুমকুর জেলার সবথেকে প্রাচীন ইতিহাস জানা যায় গঙ্গ সাম্রাজ্যের সময় থেকে। গঙ্গ রাজপরিবার খ্রিস্টীয় ১০২৫ সনের আশেপাশে কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাজত্ব করতো। বিশেষ করে এই জেলাটিতে গঙ্গ রাজত্বের সর্ব প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে যা খ্রিস্টীয় ৪০০ সনের বলে অনুমান। গঙ্গ সাম্রাজ্যের পতনের পর তুমকুর যথাক্রমে রাষ্ট্রকূট এবং চালুক্য সাম্রাজ্য অধীনস্থ হয়। এই সমস্ত শাসকবর্গের মধ্যে নোলম্ব রাজারা সবচেয়ে বেশি সময়ব্যাপী এই অঞ্চল শাসন করেছিলেন। চোল রাজারাও এই জেলার কিছু কিছু অঞ্চলে আধিপত্য কায়েম করতে সচেষ্ট হন। অষ্টাদশ শতাব্দীর পূর্বে সর্বাধিক কালব্যাপী তুমকুর অঞ্চল বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল। অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির পূর্ব উক্তি তুমকুর যথাক্রমে ওয়াদেয়ার এবং মহীশূর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ওয়াদেয়ার রাজা এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যুগ্ম প্রচেষ্টায় তুমকুর নগর নিগম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয়। নগর নিগম প্রতিষ্ঠার পর এখানকার বাসিন্দারা একপ্রকার স্বায়ত্তশাসন পায়। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে পার্শ্ববর্তী বাইশটি গ্রাম সংযোগে তুমকুর নগর নিগম নাম বদলে তুমকুর পুরসভা করা হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. https://archive.org/stream/reminiscencesli00dobbgoog
  2. http://www.tumkur.nic.in ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মার্চ ২০১৯ তারিখে Tumakuru District Gazetteer
  3. "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  4. Decadal Variation In Population Since 1901
  5. US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১১Kuwait 2,595,62 
  6. "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১Nevada 2,700,551 
  7. Correspondent, Staff (২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "Search on for tiger in Tumakuru district"The Hindu। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১