ইবাদাত
ইবাদাত আরবি আবদ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো আনুগত্য, দাসত্ব, গোলামী, বন্দেগি ইত্যাদি। সুতরাং ইবাদাত মানে হচ্ছে বন্দেগি বা গোলামী করা। ইসলামি পরিভাষায় দৈনন্দিন জীবনের সব কাজ-কর্মে আল্লাহর বিধি-বিধান মেনে চলাকে ইবাদত বলা হয়।[১] আল্লাহ কুরআনে ইরশাদ করেন- وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ অর্থাৎ আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমারই ইবাদত ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। (সূরা যারিয়াত : আয়াত ৫৬)[২][৩]
ইবাদতের মূলনীতি
[সম্পাদনা]ইবাদত হলো সম্পূর্ণরূপে কুরআন-সুন্নাহ নির্ভর বিষয়। আল্লাহ কীভাবে কোন পদ্ধতিতে তাঁর দাসত্ব তথা ইবাদত পছন্দ করেন, তা কেবল কুরআন ও রাসুলুল্লাহ সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কোনো মাধ্যমে জানা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ইবাদাতের ক্ষেত্রে নব-উদ্ভাবন বা মনগড়া পদ্ধতির কোনো অবকাশ নেই। কেননা কীভাবে ইবাদত করলে আল্লাহ খুশি ও সন্তুষ্ট হবেন তা কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমেই আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে পরিপূর্ণরূপে জানিয়ে দিয়েছেন। তাই কুরআন ও সুন্নাহর পরিপূর্ণ অনুসরণই হলো ইবাদতের মূলনীতি।
ইবাদত কী
[সম্পাদনা]ইবাদাত (عبادات) হলো ইবাদাহ এর বহুবচন। [৪] ইবাদাহ একাধিক অর্থ থাকলেও এটি ইসলামে উপাসনা পরিচালনার বিধি[৫] বা সমস্ত মুসলমানের নির্ধারিত বয়সের পরে ধর্মীয় উপাসনা কর্তব্য সম্পর্কে ইসলামী আইনশাস্ত্র (ফিকাহ) মেনে তাদের দেহ ও মন পরিচালিত করা।
ইসলাম ধর্মে ইবাদত এর পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে। এই পাঁচটি বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।[৬]
- কালেমা শাহাদাত: কালেমা শাহাদাত বলতে বুঝানো হয়েছে কালেমায়ে শাহাদাত মুখে বলা (সাক্ষ্য দেওয়া) ও অন্তরে বিশ্বাস করা (বিশ্বাস)৷ এই বিশ্বাসকে বলা হয় "ঈমান"৷[৬]
- সালাত: নামাজ বা সালাত হল ইসলাম ধর্মের প্রধান ইবাদাত। প্রতিদিন �� ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।[৬]
- যাকাত: মুসলমানদের নির্ধারিত সীমার অধিক সম্পত্তি অর্জিত হলে তা হিজরি সনের ১ বছর ধরে সংরক্ষিত থাকলে মোট সম্পত্তির ২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা ১/৪০ অংশ গরীব-দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করাই হলো যাকাত। [৬]
- রোজা: সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোযা। ইসলামী বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমজান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ।[৬]
- হজ্জ: শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ্জ্ব সম্পাদন করা ফরজ বা আবশ্যিক। আরবি জিলহজ্জ্ব মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ্জ্বের জন্য নির্ধরিত সময়।[৬]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "ইসলাম ও নৈতিকশিক্ষা"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ইবাদাতের মর্মকথা"। জাগো নিউজ টোয়েন্টিফোর। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ Tariq al-Jamil (২০০৯)। "Ibadah"। John L. Esposito। The Oxford Encyclopedia of the Islamic World। Oxford: Oxford University Press।
- ↑ Wehr, Hans। "Mawrid Reader. Hans Wehr, A Dictionary of Modern Written Arabic, 4th ed. (hw4)"। ejtaal.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৯।
- ↑ Bowker, John। "The Concise Oxford Dictionary of World Religions"। oxfordreference.com। Oxford University Press। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Ibadah - Oxford Islamic Studies Online"। www.oxfordislamicstudies.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৪-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইসলামে ইবাদাত
- ইসলামে ইবাদতের অর্থ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ মে ২০১৮ তারিখে
- ইবাদাত ওয়েব্যাক ��েশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে