কাঞ্চন প্রভা দেবী

দেশীয় ত্রিপুরা রাজ্যের রানী ও মহারাজ বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মার স্ত্রী

মহারাণী কাঞ্চন প্রভা দেবী ছিলেন দেশীয় ত্রিপুরা রাজ্যের রানী, মহারাজ বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মার স্ত্রী। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে স্বামীর মৃত্যুর পর এবং ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন ভারতের সাথে একীভূত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ত্রিপুরার রিজেন্ট ছিলেন। []

কাঞ্চন প্রভা দেবী
দাম্পত্য সঙ্গীমহারাজ বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মার
বংশধরকিরীট বিক্রম কিশোর দেব বর্মণ
রাজবংশপান্না রাজ্য (জন্ম সূত্রে)
মাণিক্য সাম্রাজ্য (বিবাহ সূত্রে)
পিতাযাদবেন্দ্র সিং জুদেও
ধর্মহিন্দু

তিনি পান্নার মহারাজা যাদবেন্দ্র সিং জুদেও এবং রাণী মানহার কুনভারবা'র কন্যা ছিলেন। তিনি সতের বৎসর বয়সে দেশীয় ত্রিপুরা রাজ্যের শেষ রাজা মহারাজ বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মাকে (১৯০৮-১৯৪৭) বিবাহ করেন। রাজা বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মা ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ১৬ বৎসর বয়সে ত্রিপুরার রাজা হন এবং প্রথানুসারে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তার রাজ্যভিষেক হয়।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে রাজা বীর বিক্রম কিশোরের মৃত্যু হয়। তাদের একমাত্র পুত্র কিরীট বিক্রম কিশোর নাবালক থাকায় ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ত্রিপুরা রাজ্যের শাসনব্যবস্থা কাউন্সিল অব রিজেন্সী তথা রাজপ্রতিনিধি পরিষদের উপর ন্যস্ত হয় যার সভাপতি তথা রিজেন্ট হন মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী []

কাউন্সিল অব রিজেন্সী কর্তৃক ত্রিপুরার শাসনভার গ্রহণের সাত দিনের মধ্যেই ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় ভমিনিয়নের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে, দ্বিখণ্ডিত ভারত স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট। যথাযোগ্য মর্যাদায় ত্রিপুরায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়।

মহারানী কাঞ্চন প্রভা দেবী স্বাধীনতা লাভের এই বিশেষ মুহূর্তে দেশবিভাগ শরণার্থীসমস্যা ইত্যাদিতে রিজেন্ট হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাহসিকতার সাথে পূর্ব পাকিস্থানের সাথে রাজ্যটিকে একীভূত করার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করেন এবং পরিবর্তে তিনি ভারতীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ত্রিপুরাকে যুক্ত করার পথ প্রশস্ত করে সুবিধা প্রদান ও আধুনিকীকরণ ও অগ্রগতির জন্য পরিশ্রম করেন। তার এই সংকটময় সময়ে তাকে সহায়তা করেন দেওয়ান অবনীভূষণ চট্টোপাধ্যায়।[] দেশভাগের কারণে সৃষ্ট সহিংসতার শিকার শরণার্থীদের পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি ভারত সরকার কর্তৃক কাউন্সিল অফ রিজেন্সি বাতিল হলে মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী একে রিজেন্ট হিসাবে ত্রিপুরার প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। [] শাসনকার্যে সাহায্যের জন্য অবনীভূষণ চট্টোপাধ্যায়, বিজয়কৃষ্ণ আচার্য ও রঞ্জিত কুমার রায় ভারত সরকার কর্তৃক দেওয়ান নিযুক্ত হন। []

তিনি ত্রিপুরা শাসনভার নিয়ে এবং স্বাধীন ভারত ইউনিয়নে ত্রিপুরার একীভূতকরণের কাজটি তত্ত্বাবধান করেন। শেষে ১৯৪৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা অন্তর্ভুক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ত্রিপুরার ভারতভুর্ক্তি সম্পন্ন হয়। [] ১৯৪৯ সালে রাজ্যটি ভারতের সাথে একীভূত হলে তিনি রিজেন্ট হিসাবে পদত্যাগ করেন।

তিনি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে আগরতলায় মহারাজা বীরবিক্রম কলেজ (এমবিবি কলেজ) প্রতিষ্ঠা করেন।

  1. Komol Singha, M. Amarjeet Singh, Identity, Contestation and Development in Northeast India
  2. Komol Singha, M. Amarjeet Singh, Identity, Contestation and Development in Northeast India
  3. "Kanchan Prabha Devi: The Maharani who prevented Tripura's merger with East Pakisthan"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  4. Komol Singha, M. Amarjeet Singh, Identity, Contestation and Development in Northeast India
  5. "Social Science" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  6. Komol Singha, M. Amarjeet Singh, Identity, Contestation and Development in Northeast India